দখিনের সময় ডেস্ক:
শীতে অনেকের চুলে রুক্ষতা বেড়ে যায়। নিয়মিত একটু যত্ন নিলে খুব সহজেই চুলের এই রুক্ষতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। পরামর্শ দিয়েছেন বিন্দিয়া বিউটি কেয়ারের রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি। শীতের শুষ্কতায় চুলের রুক্ষতা বাড়ে। তবে এটা ছাড়াও চুল রুক্ষ হওয়ার আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। প্রথমে জানতে হবে কোন কারণটিতে আপনার চুল বেশি ভোগাচ্ছে। তাহলে দ্রুত সমাধান পেতে সুবিধা হবে। তবে সাধারণ কিছু উপায় মেনেই এই শীতে রুক্ষ চুল বাগে আনতে পারেন।
চুলে গরম পানি লাগাবেন না: শীতের সময় অনেকে গরম পানি দিয়ে গোসল করেন। মাথায়ও এই পানি ব্যবহার করেন। এতে কিন্তু চুলের উপরি ভাগে যে সিল্কি ভাব থাকে তা নষ্ট হয়ে যায়। এতে চুল আরো রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই চুলে সব সময় নরমাল পানি ব্যবহার করা উচিত।
কড়া রোদ থেকে চুল নিরাপদ রাখুন: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি যেমন ত্বককে ক্ষতি করে, তেমনি চুলের জন্যও বেশ ক্ষতিকর। রোদ চুলের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে ফেলে। তাই বাইরে বের হলে স্কার্ফ বা ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। এতে চুলে ধুলাবালিও কম পড়বে। ধুলাবালি ও কড়া রোদ চুলকে রুক্ষ করে ফেলে।
শ্যাম্পুর সঠিক ব্যবহার: চুল পরিষ্কার করার জন্য শ্যাম্পু ব্যবহার করতেই হয়। অনেকে প্রতিদিনই চুলে শ্যাম্পু করেন। অনেকেরই প্রতিদিন বাইরে কাজে যেতে হয়। কিছুটা ধুলাবালি লাগেই। তাই বলে প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে চুল তার স্বাভাবিকতা হারিয়ে শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। দু-তিন দিন পর পর চুলে শ্যাম্পু করা ভালো। যাঁদের প্রতিদিন শ্যাম্পু করতেই হয় তাঁরা বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
চুল বেশিক্ষণ ভেজা রাখবেন না: গোসলের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুল মুছে ফেলুন। চুল বেশিক্ষণ ভেজা থাকলে রুক্ষ হয়ে যায়। অনেকে ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে জোরে জোরে ঘষে শুকায়। এতেও চুলের রুক্ষতা তৈরি হয়।
চুলের রুক্ষতা দূর করার উপায়: চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য কিন্তু নিজের সুস্থতাও জরুরি। চুলের সুস্থতার জন্য পানি পান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানি আমাদের শরীরকে যেমন সতেজ রাখে, তেমনি চুলকেও রাখে সতেজ। একজন মানুষের দিনে দু-তিন লিটার পানি পান করা উচিত।
চুলের রুক্ষতা দূর করতে তেল খুব ভালো কাজ করে। অলিভ অয়েল অথবা ক্যাস্টর অয়েল যেকোনো তেলই চুলকে মসৃণ করে তোলে। যেকোনো তেল রাতে ঘুমানোর আগে দিয়ে সকালে উঠে শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করে ফেলা সবচেয়ে ভালো। তবে যাঁদের তেল বেশিক্ষণ রাখতে সমস্যা তাঁরা গোসলের এক ঘণ্টা আগে তেল হালকা গরম করে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
যাঁদের চুল রুক্ষ আর সঙ্গে খুশকিও আছে তাঁরা হালকা কুসুম গরম তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে দিতে পারেন। এতে চুল ঝরঝরে হয়। যাঁদের চুল রুক্ষ তাঁরা শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। এতে চুল নরম হয়।
রুক্ষ চুলের জন্য কিছু প্যাক
ডিমের হেয়ার মাস্ক: একটি পাত্রে ডিম নিয়ে তা ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর তাতে দু-এক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশান। এরপর এই মিশ্রণটি চুলে ভালো করে মেখে ২৫-৩০ মিনিট রেখে দিন। শেষে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
কলার হেয়ার মাস্ক: কলায় অনেক প্রোটিন থাকে। প্রোটিন চুলের যত্নে বেশ উপকারী। মূলত পাকা কলা দিয়েই এই হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে হয়। একটি বাটিতে পাকা কলা নিয়ে তা ভালো করে চটকে নিন। এরপর চটকানো কলার মধ্যে সামান্য মধু আর নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি চুলে ভালো করে মেখে ২০-২৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা হেয়ার মাস্ক: অ্যালোভেরা পাতার রস একটি পাত্রে নিয়ে তাতে আমলকীর রস মিশিয়ে নিন। এরপর তা চুলে ভালো করে মাখিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ভালো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিলেই হবে। নিয়মিত ব্যবহারে রুক্ষ চুল খুব সহজেই বাগে আনা যায়।
Post Views:
49