দখিনের সময় ডেস্ক:
চাঁদা না দেওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাইফুল ইসলামকে গুলি করে পঙ্গু করার অভিযোগে দায়ের হওয়া নালিশি মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। প্রতিবেদনে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান, পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা ও এক সোর্সসহ মোট সাত জনের কারও বিরুদ্ধে ঘটনায় সম্পৃক্ততা থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে সাইফুল গুলিবিদ্ধ হন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চেকপোস্টে গ্রেপ্তার এড়াতে সাইফুল সেদিন সহযোগীদের নিয়ে অস্ত্র হাতে বন্দুকযুদ্ধ করেন বলে জানায় পুলিশ। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বিভিন্ন মামলা থেকে বাঁচার চেষ্টা হিসেবে সাইফুল নালিশি মামলাটি করেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
যদিও পুলিশের দাখিল করা প্রতিবেদনে নারাজি দেওয়ার জন্য সময় আবেদন করেছেন মামলার বাদী। আদালতে সময় মঞ্জুর হওয়ায় নারাজি দাখিল ও প্রতিবেদনটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। পাশাপাশি মামলাটি পুলিশের বিরুদ্ধে হওয়ায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন সাইফুল।
জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাইফুলের মা ছেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে নালিশি মামলাটি দায়ের করেন। সাবেক ওসি কামারুজ্জামান ছাড়াও ওই মামলায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহের অসীম দাশ, নুরু নবী, কে এম নাজিবুল ইসলাম তানভীর, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাইফুল ইসলাম, মো. রবিউল হোসেন ও পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়।
আদালত মামলার অভিযোগ আমলে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার নিচে নয়, এমন পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারকে আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ১৬ জুন রাতে সাইফুল কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার বাসা থেকে বের হন। পরে স্থানীয়ভাবে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত শাহজাহান তাকে জরুরি কথা বলার জন্য ডাকেন। একটি রেস্টুরেন্টে বসা অবস্থায় হঠাৎ সাইফুলকে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা তুলে নিয়ে যায়।
এরপর তাকে একটি সাদা প্রাইভেটকারে তোলে পুলিশ কর্মকর্তারা। গাড়িটিতে করে তাকে কয়েক ঘণ্টা নগরের বিভিন্ন সড়কে ঘোরানো হয়। একপর্যায়ে তাকে বায়জিদ লিংক রোডে আনা হয়। তখন রাত ১২টা থেকে ১টা বাজে। এসময় পুলিশ কর্মকর্তারা তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করলে সাবেক ওসি কামরুজ্জামান সাইফুলের পায়ে গুলি করেন। ঘটনার পর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একইসঙ্গে তাকে একটি অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চমেক হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে সাইফুলকে ঘটনার পরদিন রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার বাম পা কেটে ফেলা হয়।