Home বরিশাল নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না উদয়ন স্কুল, ছাত্রদের টাকায় শিক্ষকদের আনন্দ ভ্রমণ

নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না উদয়ন স্কুল, ছাত্রদের টাকায় শিক্ষকদের আনন্দ ভ্রমণ

কাজী হাফিজ ও আরাফাত সাকিব

নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না খ্রিষ্টান মিশনারী পরিচালিত বরিশাল উদয়ন স্কুল। ভবন নির্মাণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়সহ এ স্কুলটির বিরুদ্ধে নানান ধরণের অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে, শিক্ষার্থীদের টাকায় শিক্ষকদের আনন্দ ভ্রমণের খবর।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্কুলের তহবিল মানেই শিক্ষার্থীদের টাকা। আর সেই টাকায় শিক্ষার্থী ছাড়া আনন্দ ভ্রমণে যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।

উদয়ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিকোলাস লিটন টরেন্টোর নেতৃত্বে ৪৪ সদস্যের একটি দল কক্সবাজারে পাঁচ দিনের আনন্দ ভ্রমণে গেছেন গত বুধবার। এদের মধ্যে রয়েছেন ২৮ জন শিক্ষক। বাকিরা শিক্ষকদের পরিবারের সদস্য এবং অন্যান্য। উদয়ন স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিলো বুধবার ৮ ফেব্রুয়ারি। এর পরদিন বৃহস্পতিবার ৯ ফেব্রুয়ারি সংরক্ষিত ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর পর শুক্র-শনিবার দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি। এর সঙ্গে ১২ ফেব্রুয়ারি রোববার আবার সংরক্ষিত ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই অবস্থায় স্কুল বন্ধ রেখে উদয়ন স্কুলের শিক্ষকরা আনন্দ ভ্রমণে গেছেন। ফলে ছাত্ররা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হয়েছেন একটানা পাঁচ দিন।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে উদয়ন স্কুলের শিক্ষকরা একটি বিলাসবহুল বাসে করে নগরীর চৌমাথা উদয়ন প্রাইমারি স্কুলের সামনে থেকে সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজারের উদ্দেশে যাত্রা করেন শিক্ষকরা। তারা বরিশাল শহরে ফেরেন গতকাল রোববার সাকালে। বাসের সামনে শিক্ষা সফরের ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিলো।  জানাগেছে, পাঁচ দিনের ভ্রমণের জন্য বাসভাড়া, খাওয়া এবং সেন্টমার্টিনের রিসোর্ট ভাড়ার খরচ মিলিয়ে জনপ্রতি প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। বাকিটা স্কুলের তহবিল থেকে দেওয়া হবে। এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ঊর্ধ¦তন এক সরকারি কমকর্তাকে জানিয়েছেন, শিক্ষকদের চাঁদার বাইরে প্রয়োজনীয় টাকা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দিয়েছেন। কিন্তু এ টাকা কোন ফান্ড থেকে দেয়া হয়েছে তা এড়িয়ে যান স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

এদিকে দৈনিক দখিনের সময়-এর সঙ্গে আলাপকালে প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষদের টুরের জন্য যে টাকা স্কুল ফান্ড থেকে নেয়া হয়েছে তা শিক্ষকরা লোন হিসেবে নিয়েছেন। এ টাকা কিস্তিতে তাঁরা পরিশোধ করবেন।

প্রধান শিক্ষক

একটি সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষকের আনন্দ ভ্রমন অথবা এই ধরনের খাতে কোন ধরনের টাকা বরাদ্দ নেই। তাছাড়া এ ধরনের ভ্রমণে যেতে সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগে। কিন্তু অনুমতি নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। এছাড়া বিধি মোতাবেক, বিরাজমান ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে সংরক্ষিত ছুটি ঘোষণা করা যায় না। উল্লেখ্য, ১৯৫৩ সালে একটি ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারক সংঘ দ্বারা বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ও তখন থেকে ধর্মপ্রচারক সম্প্রদায় কর্তৃক পরিচালিত হয়ে আসছে। এই বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

রয়্যাল এনফিল্ডের বৈদ্যুতিক বাইক আসছে

দখিনের সময় ডেস্ক: বৈদ্যুতিক বাইকের বাজারে ইতোমধ্যেই পা রেখেছে রিভল্ট এবং ওলা। ওলার বাইক বাজারে না এলেও আকর্ষণীয় ডিজাইনের সঙ্গে কম জ্বালানি খরচ নজর কেড়েছে...

দুধের বিকল্প হিসেবে যা খেতে পারেন

দখিনের সময় ডেস্ক: উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুধ বর্তমানে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। এটি বাদাম, ওট, নারিকেল বা মটরশুঁটি যাই হোক না কেন, দুধের এই বিকল্পগুলো স্বাস্থ্যকর ডায়েট...

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতাদের সাক্ষাৎ

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...

স্কলারশিপ-এ পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ ১০০ বাংলাদেশি, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ স্কলারশিপে ১০০ বাংলাদেশিকে পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম...

Recent Comments