Home অন্যান্য নিয়োগ-নির্বাচন এক নয়, আমিও নির্বাচন করতে পারব : সিইসি

নিয়োগ-নির্বাচন এক নয়, আমিও নির্বাচন করতে পারব : সিইসি

 

দখিনের সময় ডেস্ক:
নিয়োগ ও নির্বাচন এক জিনিস নয় জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সিইসির দায়িত্ব শেষের পর আমিও নির্বাচন করতে পারব। মো. সাহাবুদ্দিনের ২২তম রাষ্ট্রপতি হওয়া প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এ মন্তব্য করেন।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
সাংবিধানিক পদে তো আপনারাও, অবসরে যাওয়ার পর আপনাদের রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতে বাধা থাকছে কিনা- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আপনি আমাকে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে দেখেন, তখন আমি দেখব সেটা গ্রহণ করতে পারব, কিনা। আমি ওই পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হব না। আমাদের ক্ষেত্রেও বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনার যারা আছেন তাদের ক্ষেত্রে শুধু একটা অপশন আছে, উনারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ লাভ করতে পারবেন। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব শেষের পর তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে পুনর্নিয়োগ লাভে অযোগ্য হবেন।’
তাহলে কি নির্বাচন করতে পারবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমি নির্বাচন করতে পারব। আমার ব্যক্তিগত মত। এ ক্ষেত্রে ওখানে যদি বলে আমি নিয়োগের অযোগ্য; আমি একটি যুক্তি নিতে পারি যে, আমি নিয়োগের অযোগ্য, কিন্তু নির্বাচনের অযোগ্য নই।’
তিনি নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রসঙ্গে বলেন, ‘একটি প্রশ্ন উঠেছে যে, প্রার্থীর সাংবিধানিক বা আইনগত অযোগ্যতা রয়েছে। এটা সত্য যে দুদক আইনে ৯ ধারায় বলা হয়েছে, কর্মাবসানের পর কোনো কমিশনার প্রজাতন্ত্রের লাভজনক কোনো পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। এটা আছে। এটার আলোকে বিষয়টি বিবেচ্য। এতে অনেকে বলতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রপতির পদটি একটি লাভজনক পদ। আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচনী কর্তা হিসেবে ওই রায়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা করার সময় যেটাকে বাছাই বলে সেটা কিন্তু দায়সারা গোছের দায়িত্ব নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে, প্রার্থী যাই বলুক কমিশনারেরও দায়িত্ব আছে বাছাই করে দেখার যে, প্রার্থীর কোনো সাংবিধানিক বা আইনগত অযোগ্যতা রয়েছে কিনা। আমরা দেখলাম প্রথমত স্পষ্টত কোনো আইনগত অযোগ্যতা নেই। এ কারণে, ৯ ধারায় (দুদক আইনের) বলেছে, কোনো লাভজনক পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। আমরা কিন্তু এখান থেকে প্রার্থীকে নিয়োগ দান করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দান করেননি। প্রধান বিচারপতিও নিয়োগ দান করেননি। কেউ নিয়োগ দান করেননি এবং কেউ নিয়োগ দান করতে পারেন না। উনি নির্বাচিত হয়েছেন। আইন তাকে নির্বাচিত করেছে প্রচলিত প্রথা অনুসরণ করে।’
নির্বাচন ও নিয়োগের মধ্যে যে পার্থক্য এটা বুঝতে হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘এটাকে আলোচনায় না এনে উনাকে লাভজনক পদে বসানো হয়েছে বা হতে যাচ্ছে। আমাদেরকে নির্বাচন ও নিয়োগের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে হবে। তাকে যদি এখান থেকে নিয়োগ দান করা হতো; তাহলে সেটি অবশ্যই অবৈধ হতো। কারণ নিয়োগ দানের কর্তৃপক্ষ বা কর্তৃত্ব আমাদের নেই, কারোই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সংসদের সদস্যরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন না। তারা নির্বাচিত হন। সেটাই তাদের নিয়োগের সমতুল্য। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদ সাহেব যখন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখন দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এ বিষয়ে রিট মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সাহাবুদ্দীন আহমেদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পূর্ণ বৈধ। এতে কোনো অবৈধতা হয়নি। আর আলোচনায় তিনি বলেছেন, পদটি অফিস অব প্রফিট হলেও এটা অফিস অব প্রফিট ইন দ্যা সার্ভিস অব দ্যা রিপাবলিক নয়। সেখানে বিভাজন করে দেখানো হয়েছে।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ চূড়ান্ত একটি রায় বলে দিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ঠিক তেমনি একজন অবসরপ্রাপ্ত দুদকের কমিশনার রাষ্ট্রপতি পদে কোনোভাবেই অবৈধ নয়। সেই দিক থেকে এই প্রশ্নে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বিভিন্ন ধরণের মতামত দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিটা অনাবশ্যক বা সমুচিত হবে না বলে আমি মনে করি।’
সিইসি বলেন, ‘উনি নির্বাচিত হয়েছেন পরোক্ষভাবে পুরো দেশবাসীর পক্ষে, প্রত্যক্ষভাবে জাতীয় সংসদের সদস্যদের দ্বারা। যেহেতু একজনমাত্র প্রার্থী ছিলেন এবং তার দুটি মনোনয়নপত্র ছিল। আমি সেটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখেছি এবং প্রচলিত যে আইন-কানুন সংবিধান সবকিছু বিবেচনা করে দেখেছি। তার (মো. সাহাবুদ্দিন) এই পদে নির্বাচিত হতে কোনো ধরণের অযোগ্যতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে যদি এই ধরনের অবান্তর বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়। সেটা হবে অনাকাঙ্ক্ষিত। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, বিচারপতি সাহাবুদ্দীন নির্বাচিত হয়েছিলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত হননি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নতুন ফোন কিনছেন, জেনে নিন এ বিষয়গুলো

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই আজকাল নতুন ফোন কেনার সময় পুরোনো ফোনটি বিক্রি করে দেন বা ফোনটি বদলে নেন। পুরোনো ফোন বদলে নতুন ফোন কেনার সময়...

খেজুর ভেজানো পানি খেলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: খেজুর সবচেয়ে জনপ্রিয় শুকনো ফলের মধ্যে অন্যতম। এর স্টিকি টেক্সচার এবং প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি স্বাদ সবাই পছন্দ করেন। সেইসঙ্গে এটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং...

যে কারণে জামিন না পেয়ে কারাগারে মাহমুদুর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জামিন পাননি। আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে...

ছেলের জন্মদিনের অপুর বাসায় শাকিব খান

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের গর্ভে ধারণ করা ছেলে আব্রাম খান জয়কে কতটা ভালোবাসেনস শাকিব খান, তা স্পষ্ট। অনুরাগীরা মনে করছেন, ছেলের জন্মদিনের...

Recent Comments