Home সারাদেশ সেই স্কুলশিক্ষকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি

সেই স্কুলশিক্ষকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি

দখিনের সময় ডেক্স:

বরিশালে পিঠে সিলিন্ডার বেঁধে মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সেই মায়ের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। গতকাল সোমবার তাঁর শ্বাসকষ্ট অনেকটাই কমেছে। অল্প পরিমাণে খাওয়াদাওয়াও করতে পারছেন তিনি।

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ওই মায়ের নাম রেহেনা পারভীন (৫০)। তিনি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার স্কুলশিক্ষক। গত শনিবার বিকেলে রেহেনাকে চিকিৎসার জন্য মোটরসাইকেলে করে বরিশালে নিয়ে আসেন তাঁর ছেলে জিয়াউল হাসান। শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা মায়ের ব্যবহারের জন্য পিঠে বেঁধে নেন অক্সিজেন সিলিন্ডার। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল।

রেহেনা পারভীন এখন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের একটি কেবিনে চিকিৎসাধীন। ছেলে তরুণ ব্যাংক কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান মায়ের সঙ্গেই আছেন।

পরিবার ও হাসপাতাল সূত্র বলছে, রেহেনা পারভীনের ফুসফুসের বড় একটা অংশ সংক্রমিত হয়েছে। এ জন্য তাঁকে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে। তবে শ্বাসকষ্ট অনেক কমে এসেছে। শ্বাসকষ্টের কারণে আগের দুদিন ধরে যেখানে আট লিটার অক্সিজেন লাগছিল, সেখানে সোমবার এক থেকে দেড় লিটার লেগেছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তাঁকে উচ্চমাত্রার আমিষযুক্ত খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। এতে তাঁর ডায়াবেটিসের মাত্রা অনেক বেড়েছে। ইনসুলিন দিয়ে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।

নিরুপায় হয়ে মোটরসাইকেলে করে মাকে বরিশালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গামছা দিয়ে পিঠের সঙ্গে শক্ত করে অক্সিজেন সিলিন্ডারটি বাঁধেন। এরপর মাকে পেছনে বসিয়ে তাঁর মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেন। এভাবে ১৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় পৌঁছান বরিশালে।

রেহেনা পারভীন ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যপাশা এলাকার বাসিন্দা। তিনি নলছিটি বন্দর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ১০ দিন ধরে বাড়িতে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। ১০ এপ্রিল করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। কিন্তু প্রতিবেদন এখনো পাননি। এর মধ্যেই গত শনিবার সকালে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট। কষ্ট কমাতে অক্সিজেনের সিলিন্ডার কিনে বাড়িতে আনেন ছেলে জিয়াউল হাসান। মায়ের মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেন। তবু অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। এ অবস্থায় মাকে বরিশালে নিতে তিনি অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো গাড়ির খোঁজে নামেন। কিন্তু পাচ্ছিলেন না। নিরুপায় হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে করে মাকে বরিশালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গামছা দিয়ে পিঠের সঙ্গে শক্ত করে অক্সিজেন সিলিন্ডারটি বাঁধেন। এরপর মাকে পেছনে বসিয়ে তাঁর মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেন। এভাবে ১৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় পৌঁছান বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পাশে আরেকটি মোটরসাইকেলে করে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছোট ভাই রাকিব। তাঁদের ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

পরীমণি প্রথম স্বামীর পরদিন মারাগেলো প্রথম পরিচালক

দখিনের সময় ডেস্ক: লাইফ সাপোর্টে থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির প্রথম সিনেমা ‘ভালোবাসা সীমাহীন’-এর পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল।  গুলশানের...

বাউফলে ইউএনও’র বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

নয়ন সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজীর বিরুদ্ধে অনিয়ম,দুনীতি ও অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈশোম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গতকাল...

নিজের চেয়ার ঠিক রাখতেই ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা

দখিনের সময় ডেস্ক: জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...

সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: তোফায়েল

দখিনের সময় ডেস্ক: সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...

Recent Comments