দখিনের সময় ডেস্ক:
২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপজয়ী দেশ আর্জেন্টিনায় ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে মূল্যস্ফীতি। গতমাসে দেশটিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির গড় হার ছুঁয়েছে ১০০ শতাংশের কোঠা। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে ব্যাংক সুদের হার ৯৭ শতাংশ বাড়িয়েছে আর্জেন্টিনার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর্জেন্টিনার অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই দেশটিতে ১৯৯০ সালের পর থেকে এই পর্যায়ের মূল্যস্ফীতি আর দেখা যায়নি। এমনকি, আর্জেন্টিনার ইতিহাসে এর আগে কখনও মূল্যস্ফীতির হার ১০০ শতাংশেও পৌঁছায়নি। প্রকৃতপক্ষে, আর্জেন্টিনর আগে আগে বিশ্বের মাত্র দু’টি দেশের মূল্যস্ফীতি ১০০ শতাংশে পৌঁছানোর রেকর্ড পাওয়া যায়— ভেনেজুয়েলা এবং জিম্বাবুয়ে।
একদিকে আর্জেন্টিনায় যেমন হু হু করে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি; তেমনি অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে কমছে দেশটির মুদ্রা পেসোর মান। ২০২২ সালে ডলারের বিপরীতে পেসোর মান ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। চলতি বছর অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা আর্জেন্টিনায়। তার আগে এই টালমাটাল অর্থনীতির জেরে স্বাভাবিকভাবেই বিব্রত দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আলবের্তো ফের্নান্দেজ। ইতোমধ্যে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন— সামনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না তিনি। দেশটির অর্থমন্ত্রী বর্তমানে পেসোর অবমূল্যায়ন রোধ এবং মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। তবে আর্জেন্টিনার অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাংক সুদ ৯৭ শতাংশ বৃদ্ধির এই পদক্ষেপ এক্ষেত্রে তেমন কাজে আসবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অব আর্জেন্টিনার’র সাবেক উপব্যবস্থপক মিগুয়েল কিগুয়েল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের স্প্যানিশ সংস্করণ সিএনএন এন স্প্যানিয়লকে মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক সুদের হার বাড়ানো একটি কার্যকর কৌশল বটে, তবে এতে মূল্যস্ফীতি কাঙিক্ষত পর্যায়ে আসতে অনেক সময় লাগে। মূল্যস্ফীতি যখন লাগামহীন হওয়া শুরু করে তখনই আসলে এই কৌশল নেওয়ার উপযুক্ত সময়।’ ‘সেই হিসেবে সরকার অনেক দেরিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমান অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে এই পদ্ধতি কতখানে কার্যকর হবে তা নিয়ে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। সরকারের হাব-ভাবে মনে হচ্ছে— খুব শিগগিরই মূল্যস্ফীতির কাছে তারা আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে।’