Home বরিশাল ‘দরজার ঘাস গরুতে খায় না।’

‘দরজার ঘাস গরুতে খায় না।’

আলম রায়হান:
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাত প্রার্থী। এদের মধ্যে ভোটারদের আলোচনায় আছেন ৪ জন। তারা হচ্ছেন, আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের সেরনিয়াবাত ওরফে খোকন সেরনরিয়াবাত, ইসলামী আন্দোলনের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, জাতীয় পার্টির ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন। ভোট গ্রহণ ১২ জুন।
মেয়র পদে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম লড়ছেন হাতপাখা প্রতীকে। চরমোনাই কেন্দ্রিক পীরের দল হিসেবে পরিচিত ইসলামী আন্দোলন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেয়। তবে এই দলের বিজয় এখন পর্যন্ত ইউপি ও উপজেলা পর্যায়েই সীমাবদ্ধ। এই দলের কেউ এখনো সংসদ সদস্য বা নগর পিতা হতে পারেননি। আর সারা দেশে পীরের অনেক মুরিদ-ভক্ত থাকলেও দলটির ভোট ব্যাংক তেমন শক্তিশালী নয়।
সূত্র মতে, বরিশাল শহরে ইসলামী আন্দোলনের নিজস্ব ভোটারের সংখ্যা হতাশাজনক, দশ থেকে বারো হাজারে সীমাবদ্ধ। এদিকে অনেক শক্তি কেন্দ্র ইসলামী আন্দোলনকে পছন্দ করে না। জামায়াতসহ অন্যান্য ইসলামী দলগুলো এই দলটির ঘোর বিরোধী। এর সঙ্গে যুক্ত আছে অন্য এক মানসিকতা। বরিশালে একটি প্রবচন আছে, ‘দরজার ঘাস গরুতে খায় না।’ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম এই প্রবচনের আওতায় আছেন বলে মনে করা হয়। এর উপর আছে, বিএনপির সঙ্গে পুরনো এক বৈরিতা। চরমোনাইতে বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ারের উপর হামলা করে তার দাঁত ফেলে দেবার মতো নারকীয় ঘটনা ঘটানোর রেকর্ড আছে ইসলামী আন্দোলনের। ফলে বিএনপির এক অংশের কাছে এই দলটি বিশেষ অপছন্দের, ভয়ংকর!
এরপরও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বিজয়ী হতে পারেন- এমন ধারণা অনেকেরই। নিদেন পক্ষে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকার সম্ভবনার কথা বলছেন দৃঢ়ভাবে। এ ব্যাপারে পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এক. ক্ষমতাসীন দলের মাজুল ভোট ব্যাংক । দুই. আওয়ামী লীগের চরম দলীয় অনৈক্য। তিন. বিএনপি সরাসরি ভোটে না থাকা। চার. নির্বাচনী প্রচারনায় ইসলামী আন্দোলনের নারী স্কোয়াডের অংশ গ্রহন। পাঁচ. বর্ধিত ও বস্তি এলাকায় ভোটারদের আধিক্য। উল্লেখ্য, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত ২০ ওর্য়াড এতোই অনুন্নত যা গ্রামেরেও অধম। বস্তি ও অনুন্নত এলকার ভোটারদের সহজে হাত পাখার পক্ষে নেয়া সহজতর বলে মনে করা হচ্ছে।
এর সঙ্গে যুক্ত আছে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের শিক্ষা-দীক্ষা-ব্যক্তিত্ব। কারো কারো বিবেচনায় এই দিক থেকে প্রার্থীদের মধ্যে এক নম্বরে আছেন সৈয়দ ফয়জুল করীম। বিশেষ করে, তার সঙ্গে যারই কথা হবে সে কোন না কোন মাত্রায় তাঁর অনুরক্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এদিকে বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী পেয়েছেন প্রায় ৪৫ হাজার ভোট। আর রংপুর সিটি নির্বাচনে হয়েছেন দ্বিতীয়। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, বরিশালে কোন অবস্থান অধিকার করে ইসলামী আন্দোলন। ৮ জুন ঘোষিত দলের নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে ‘দুঃশাসনমুক্ত নগরী গড়তে ফয়জুল করীমের ১৭ দফায় কতটা সাড়া দেয় বরিশাল নগরবাসী- এটিই এখন দেখার অপেক্ষা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-আমেরিকান কিশোর হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল

দখিনের সময় ডেস্ক: এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমেরিকান-ইহুদি কিশোর (১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী) 'আমি হামাসের সাথে সহানুভূতিসম্পন্ন'- এমন বক্তব্যের সাথে একমত। ইসরাইলের একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে...

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

Recent Comments