দখিনের সময় ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিদের মধ্যে অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে বিতর্কিত কিংবা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অবস্থা এখন এমন যে-এলাকায় নিজ দলের নেতাকর্মীরাই নির্বাচনে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে শাসক দলের জরিপের কাজ চলছে। এতে বিচিত্র ও ভয়াবহ সব তথ্য উঠে এসেছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারা আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবেন, তা নিশ্চিত করতে ৩০০ আসনেই বাছাইয়ের কাজ চলছে। সরকারের বিশেষ কয়েকটি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে চালানো হয়েছে জরিপ কার্যক্রম। সর্বশেষ ২২শে জুন অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার আগে আরেকটি অর্থাৎ শেষ জরিপ চালানো হচ্ছে। এই জরিপের ফলাফল মনোনয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিএনপি নির্বাচনে আসুক অথবা না অসুক, আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিদের অনেকে মনোনয়ন থেকে বাদ পড়তে পারেন। আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পুরোনো নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত বলয় তৈরির মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যাচ্ছেন-দেশজুড়েই এমন অভিযোগ পেয়েছেন জরিপ কাজে অংশ নেওয়া টিমগুলোর সদস্যরা।
এই কাজ করতে গিয়ে জরিপকারীরা ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান এমপিদের অনেকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিদের অনেকেই কোনো না কোনোভাবে বিতর্কিত। কেউ আবার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, এলাকায় নিজ দলের নেতাকর্মীরাই নির্বাচনে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলে এসব এমপি ভরাডুবির শিকার হবেন। তাই এবার তাদের ওপর কোনোভাবেই ভরসা করছেন না স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
এমনও অভিযোগ আছে, বর্তমানে কোনো কোনো এমপির অত্যাচারে ঘরছাড়া হয়েছেন আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। এসব তথ্যযুক্ত প্রতিবেদন জরিপকারীরা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছেন। সর্বশেষ ২২ জুন অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার আগে আরেকটি অর্থাৎ শেষ জরিপ চালানো হচ্ছে। এই জরিপের ফলাফল মনোনয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বৈঠকে শেখ হাসিনা জানান, ইতোমধ্যে ১৭টির মতো জরিপ চালানো হয়েছে।
আগামী নির্বাচনে প্রতিপক্ষের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা যাদের দিয়ে হতে পারে, পৃথকভাবে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। যারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের তালিকাও তৈরি করছে দলটি। বিএনপি নির্বাচনে এলে একরকম আবার না এলে আরেক ধরনের প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ। এ কারণে শাসক দলটি এখনই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা করবে না। তবে পৃথকভাবে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয়দের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানান আওয়ামী লীগের একজন নীতিনির্ধারক। তার মতে, প্রার্থী তালিকার ব্যাপারে চূড়ান্ত মতামত দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।