Home শীর্ষ খবর এডিসি হারুনের যত অপকর্ম

এডিসি হারুনের যত অপকর্ম

দখিনের সময় ডেস্ক:
ডিএমপি রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি)  হারুনের অপকর্ম এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ৩১তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সহকর্মীকে প্রকাশ্যে থাপ্পড়, সাংবাদিক নির্যাতন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা বৃদ্ধির আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ আছে।
এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী সাংবাদিক নিজ বাহিনীর সদস্যকে লাঞ্ছিত ও নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে।  কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থায় না নেওয়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ নারীঘটিত ঘটনার প্রতিবাদ করায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই নেতা নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে- এমন অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। তারা এডিসি হারুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। শনিবার( ৯ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষ থামাতে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ এক পুলিশ কনস্টেবলকে থাপ্পড় মারছেন। তখন তার এ ধরনের আচরণের নিন্দা জানিয়েছিলেন অনেকে। ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ১৮ এপ্রিল রাতে। নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের লক্ষ্য করে পুলিশ সদস্যদের রাবার বুলেট ছোড়ার নির্দেশ দিচ্ছিলেন এডিসি হারুন। এসময় ‘গুলি শেষ হয়ে গেছে’ বলায় ওই পুলিশ কনস্টেবলকে থাপ্পড় মারেন তিনি। এ নিয়ে গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
শুধু নিজের সহকর্মীকেই নয়- এডিসি হারুন তার নেতৃত্বে শাহবাগে সমাবেশকারীদের পেটানোর ঘটনা, এমনকি তিনি নিজেই লাঠি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের পেটাচ্ছেন- এমন ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। তবে বারবার এসব ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বা পুলিশ সদরদপ্তর থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো দীর্ঘদিন স্বপদে বহাল ছিলেন তিনি।
গত ৭ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামি আবদুল্লাহ। তখন তার মাথায় ১৪টি সেলাই। এই শিক্ষার্থী জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শাহবাগে একটি সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেদিন ‘শান্তিপূর্ণ’ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ব্যাপক লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে তিনিসহ অন্তত ১২ জন আহত হন। সেদিনের ঘটনায় নেতৃত্বে দেন এডিসি হারুন অর রশীদ। এডিসি হারুন সম্পর্কে এ ধরনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের মন্তব্য হলো ‘তিনি (এডিসি হারুন) শুধু পেটান।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, রাজধানীর রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে ‘বিনা উসকানিতে’ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করা হয়েছে। শুধু এটা নয়, এ রকম বেশ কয়েকটি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরাও একই অভিযোগ করেছেন।
এডিসি হারুনের নেতৃত্বে শাহবাগে সমাবেশকারীদের পেটানোর ঘটনা, এমনকি তিনি নিজেই লাঠি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের পেটাচ্ছেন- এমন ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে শাহবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এমন সময় রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদের নির্দেশনায় তিনিসহ অন্য সহকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের পেটাতে শুরু করেন। পেটানোর আগে তার গায়ে জ্যাকেট এবং মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেন তার সহকর্মীরা। হেলমেট পরানোর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মারমুখো হয়ে উঠেন। তিনি ও তার সহকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের অমানুষিকভাবে লাঠিপেটা করেন।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। অবরোধ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলছিল। এরপর পুলিশ এসে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। সেখান থেকে সরে শাহবাগ থানামুখী রাস্তার দিকে এগোলে পুলিশ চাকরিপ্রত্যাশীদের কয়েকজনের ওপর লাঠিপেটা করে। এডিসি হারুনও লাঠিপেটা করে যুবকদের ধাওয়া দেন বলে জানান বিক্ষোভকারীরা। সেসময় ছবি তুলতে গেলে কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে এডিসি হারুন দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
সাংবাদিকরা তখন অভিযোগ করেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের শাহবাগ মোড় থেকে বলপ্রয়োগ করে সরানোর সময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশ খারাপ ব্যবহার করে এবং কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কা দেয়।
এবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ ওঠে। আহতরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-আমেরিকান কিশোর হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল

দখিনের সময় ডেস্ক: এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমেরিকান-ইহুদি কিশোর (১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী) 'আমি হামাসের সাথে সহানুভূতিসম্পন্ন'- এমন বক্তব্যের সাথে একমত। ইসরাইলের একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে...

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

Recent Comments