Home শীর্ষ খবর সময় এখন আর আছে কি, এ এক বড় প্রশ্ন

সময় এখন আর আছে কি, এ এক বড় প্রশ্ন

দেশের মানুষের আগ্রহ এবং আতঙ্ক আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে এবং উদ্বেগের প্রশ্ন, নির্বাচন প্রশ্নে বিদেশিদের অতি আগ্রহকেন্দ্রিক। এ ক্ষেত্রে দেশবাসী অন্ধকারে আছে। অনেকটা একই অবস্থা খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও। ২২ অক্টোবর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কথিত ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ শেষে ব্রিফকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়।’ কিন্তু এটি যে কার বিষয়, তা নিয়ে কিন্তু বেশ ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আবার অন্যরকম ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সাংবাদিকদের ব্রিফকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি বক্তব্য এবং রাতে নাকচ করে দেওয়া ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, ‘আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে সড়ক বন্ধ করা হবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।’ কিন্তু ওইদিন রাতেই মার্কিন দূতাবাসের প্রেস কর্মকর্তা স্টিফেন আইভ্যালি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বৈঠকে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সড়ক বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা হয়নি।’ বিবৃতিতে স্টিফেন উল্লেখ করেন, ‘রাষ্ট্রদূত হাস বৈঠকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও হস্তক্ষেপমুক্ত অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।’ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে সত্য বলছেন? আর পর্দার অন্তরালে ঘটনা প্রবাহ নিয়ে সত্যটা আসলে কী! এই পরিস্থিতি কি রাজনীতিকদের অর্জিত নাকি আরোপিত? গভীরের ঘটনা যাই হোক, রাজনীতিকদের বোধোদয় হওয়ার সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জুলফিকার আলি ভুট্টোর এক বৈঠকের দিকে নজর ফেরানো যাক। আলোচনা স্থলের লবিতে ভুট্টোকে ডেকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘সমস্যা রাজনৈতিক, রাজনৈতিকভাবেই আমাদের সমাধান করতে হবে। এর মধ্যে সেনাবাহিনী টানা ঠিক হবে না।’ বলাবাহুল্য, বঙ্গবন্ধুর এ কথা ভুট্টো আমলে নেননি। তিনি রাজনীতির পরিবর্তে সামরিক ব্যবস্থার দিকেই ঝুঁকে ছিলেন। তার এ ঝোক তাকে সামরিক বাহিনীর ওপর নির্ভরতার দিকে নিয়ে গিয়েছিল এবং এ ধারা তাকে নিয়ে গেছে ফাঁসির মঞ্চে। নির্ভরতার সেনাবাহিনীই তাকে ফাঁসিতে লটকিয়েছে। আমাদের দেশের রাজনীতিকরা সম্প্রতি বিদেশিদের দিকে ঝুঁকেছেন। স্মরণ করা যেতে পারে, একসময় পরাশক্তি বিশ্বপরাশক্তি বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করত। পরে নিজেরাই অভিযান শুরু করে দিল। যে ধারায় ধ্বংস হলো ইরাক-লিবিয়া। এ ধারার সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনীতিকরা। পাশাপাশি ব্যবহার করছে ইসরায়েল ও বিভিন্ন গোষ্ঠীকে।
অধুনা পরাশক্তি  ধুয়া তুলেছে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে। তবে লক্ষ্য কিন্তু আগের মতোই থেকে গেছে। আর তাদেরই আমাদের দেশের রাজনীতিকরা তোষণ করছেন। এমনকি কেউ অবতার, এমনকি বাবাও বলছেন। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আমাদের দেশের পরাশক্তির ওপরই নির্ভর করছেন, যা বানরের পিঠা ভাগের গল্পের চেয়েও অনেক বড় কুফল বয়ে আনতে পারে। কাজেই রাজনীতিকদের হুঁশে ফিরে আসা প্রয়োজন। অবশ্য, এ সময় এখন আর আছে কি না, তাও এক বড় প্রশ্ন।
আলম রায়হান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক (দৈনিক কাবেলায় প্রকাশিত, ২৬ অক্টোবর ২০২৩))

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

রয়্যাল এনফিল্ডের বৈদ্যুতিক বাইক আসছে

দখিনের সময় ডেস্ক: বৈদ্যুতিক বাইকের বাজারে ইতোমধ্যেই পা রেখেছে রিভল্ট এবং ওলা। ওলার বাইক বাজারে না এলেও আকর্ষণীয় ডিজাইনের সঙ্গে কম জ্বালানি খরচ নজর কেড়েছে...

দুধের বিকল্প হিসেবে যা খেতে পারেন

দখিনের সময় ডেস্ক: উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুধ বর্তমানে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। এটি বাদাম, ওট, নারিকেল বা মটরশুঁটি যাই হোক না কেন, দুধের এই বিকল্পগুলো স্বাস্থ্যকর ডায়েট...

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতাদের সাক্ষাৎ

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...

স্কলারশিপ-এ পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ ১০০ বাংলাদেশি, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ স্কলারশিপে ১০০ বাংলাদেশিকে পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম...

Recent Comments