Home মতামত ৯৬ সালের আ. লীগ সরকার ছিলো টলটলায়মান

৯৬ সালের আ. লীগ সরকার ছিলো টলটলায়মান

বিএনপি সরকারের ‍একগুয়েমিতে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কারনে অনিবার্য হয়ে পড়ল ’৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২১ বছর পর ক্ষমতাসীন হয় আওয়ামী লীগ। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। নির্বাচনি প্রচারণায় অনেক নমনীয় হয়ে ভোট প্রার্থনা করেছে আওয়ামী লীগ। দলীয়প্রধান নির্বাচনি প্রচারণায় বলেছেন, ‘ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দেশ ও জাতিকে সেবা করার সুযোগ দিন।’ আকুল আকুতি-মিনতি করে নির্বাচনি বৈতরণী পার এবং এরশাদের দল জাতীয় পার্টির সহায়তা নিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসে শেখ হাসিনা সরকার। কিন্তু এ সরকার ছিল খুবই দুর্বল। এটিকে প্রকৃত অর্থে ক্ষমতায় আরোহণ না বলে ‘ক্ষমতায় আশ্রয় গ্রহণ’ বলাই অধিকতর বাস্তবসম্মত। এ সিংহাসন ছিল খুবই টলটলায়মান, কচুপাতার পানি। এরপরও কোনোরকম মেয়াদ শেষ করতে পেরেছে শেখ হাসিনার প্রথম সরকার।
মেয়াদ শেষে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো একটি নির্বাচিত সরকার হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করে সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে দায়িত্ব অর্পণ করতে পেরে আমি আনন্দিত।’ কিন্তু তাঁর এ আনন্দ বিষাদে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। কারণ এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল বিএনপির নেপথ্য মুরুব্বিদের আরেক ফাঁদ। বিষয়টি টের পেয়ে নির্বাচনি প্রচারণাকালেই আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছিলেন- ‘বিএনপি যা বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাই করে।’ কিন্তু সেই সময় কার অভিযোগ কে শোনে! শোনার কথাও নয়। কারণ সবকিছুরই একটি টাইম ফ্রেম থাকে এবং ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্লুপ্রিন্ট অনুসারে বিজয়ী হয় বিএনপি এবং যথারীতি হেরে যায় আওয়ামী লীগ।
২০০১ সালে নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও পরের নির্বাচনে আস্থা রাখতে পারেনি বিএনপি। ফলে পুনরায় পুরনো তরিকায় হাঁটতে শুরু করে। সরকারের মেয়াদ শেষের দিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে সংবিধানে একটি বড় সংশোধনী আনে। আরেকজন লতিফুর রহমান খোঁজার চেষ্টা। ব্লুুপ্রিন্ট স্পষ্ট, নিজেদের পছন্দের প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে রেখে নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়া। ’৭৯ সালে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের অধীনে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও খালেদার ফাঁদে আর পা দেয়নি আওয়ামী লীগ। তীব্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি রাজনীতিতে তৃতীয় পক্ষ হস্তক্ষেপ করে। বিবদমান দুই বাঁদরের পিঠা শিয়ালের হাতে চলে যাওয়ার গল্পের আদলে প্রতিষ্ঠিত হয় সামরিক বাহিনী সমর্থিত তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এবার দুই মেরুর আওয়ামী লীগ-বিএনপির দুই নেত্রী একই সঙ্গে মাইনাস ফর্মুলার টার্গেট হন। কিন্তু এ প্রয়াস ফলপ্রসূ হয়নি। বরং দুই বছরের মাথায় ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’ প্রবচনকে ধ্যানজ্ঞান করে ‘নিরাপদ নির্গমনের’ পথ গ্রহণ করে ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিন সরকার। এজন্য আয়োজন করা হয় ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচন।
# বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত ২১/১/২৯২৪। শীরোনাম, ‘জন্মকালীন প্রবণতায় বিএনপির বর্জন’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

Recent Comments