নির্বাচন উত্তর আওয়ামী লীগের তুনমূলে জটিল পরিস্থিতি কোন এলাকায় কার সঙ্গে কার বিরোধ, সেটি চিহ্নিত করাই হচ্ছে বিভাগীয় কমিটির প্রথম কাজ। এরপর সেসব জেলায় গিয়ে চিহ্নিত পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বিরোধ মেটাতে কাজ করবে কমিটি। এরই মধ্যে সব কমিটির কাছে নির্দেশনা পৌঁছে গেছে এবং তারা নাকি কাজও শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এই কাজের নামে যে ‘অকাজ’ হবে না, তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে?
বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, নিজ নিজ এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারাই বিরোধ মেটানোর কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন। তারা নিজেরাই তো এলাকাভিত্তিক বিরোধের সঙ্গে জড়িত। আবার কারও কারও বিরুদ্ধে নানা ধরনের বাণিজ্যের পাশাপাশি মনোনয়নবাণিজ্যের অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। ফলে সালিশদার হিসেবে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটা, তাও বিবেচনার বিষয়। তাদের হস্তক্ষেপে কি বিরোধ মিটবে?
এ বিষয়ে অবশ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গণমাধ্যমকে বলেছেন, কোন্দলে লিপ্ত পক্ষগুলোর সঙ্গে বসার পরও যদি বিরোধ না মেটে, তাহলে তাদের ঢাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে বসানো হবে। এর পরও যদি তারা দলের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা অমান্য করেন, সে ক্ষেত্রে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর হব। প্রয়োজনে বহিষ্কার করার মতো সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
এদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে শুধু স্বার্থের দ্বন্দ্ব নয়, মানসিক দূরত্বও তৈরি হয়ে গেছে। ফলে বিভাগীয় কমিটির পক্ষে বিরোধ মেটানো কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর ইচ্ছা করলেই মানসিক বিরোধ মেটানো যায় না। তবে দল থেকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হলে মাঠপর্যায়ের নেতারা বেশিদিন বিরোধ পুষে রাখবেন না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে বিরোধ কিন্তু তুষের আগুনের মতো থেকে যাবে। এ অবস্থায় বিএনপির পালে হাওয়া লাগলে অথবা অন্য কোনো কারণে সরকার বড় ধরনের বিপদে পড়লে তৃণমূলে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কতটা দৃঢ় অবস্থান নিতে পারবে, সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, শিরোনাম: ‘কোথায় যাচ্ছে আওয়ামী লীগ’