Home শীর্ষ খবর অপরিকল্পিত খননে নালায় পরিণত হয়েছে সোনাই নদী, বিতর্কিত ভূমিকায় নদী কমিশন

অপরিকল্পিত খননে নালায় পরিণত হয়েছে সোনাই নদী, বিতর্কিত ভূমিকায় নদী কমিশন

দখিনের সময় ডেস্ক:
অপরিকল্পিত খনন, দখল ও দূষণ এবং উজানে দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করায় হবিগঞ্জের সোনাই নদী একটি সরু নালায় পরিণত হয়েছে। এই নদী দখল-দূষণ রক্ষায় দীর্ঘ আন্দোলন করেও কোনো কাজ হয়নি। বাংলাদেশ নদী কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের বিতর্কিত ভূমিকায় নদীর শেষ রক্ষা হবে কি না এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পরিবেশবিষয়ক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)।
আজ শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বাংলাদেশ নদনদী রক্ষায় প্রতিবন্ধকতা : প্রেক্ষিত সোনাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে ধরা। সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন ধরার কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সহ-আহ্বায়ক ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমীন মুরশিদ।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য-সচিব শরীফ জামিল বলেন, সুনামগঞ্জের সোনাই নদীর উজান দিকে দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করায় শুকনা মৌসুমে নদীতে পানি প্রবাহ তেমন একটা থাকে না। অপরিকল্পিত খনন, মাধবপুরে দখল ও দূষণের শিকার হয়ে সুন্দর এই নদীটি একটি সরু নালায় পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে সোনাই নদী দখল করে ‘সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স’ নামে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ ও প্রচেষ্টায় ২০১১ সালে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ একটি বিভাগীয় তদন্ত করে; কিন্তু ভবন নির্মাণের কাজ নির্বিঘ্নে চলতে থাকে। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিষয়টি ২০১৫ সালে জাতীয় নদী টাস্কফোর্সের সভায় উত্থাপন করা হয়। টাস্কফোর্স কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে।
এরপর তৎকালীন নদী কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে সেই স্থান ঘুরে সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স নদীর প্রবাহকে যে বাধাগ্রস্ত করছে এবং স্থাপনাটি যে নদীর জায়গায় করা হচ্ছে এই ব্যাপারে সবাই একমত হয়। কিন্তু চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সেটি উল্লেখ না করে ভবনটি ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদন দেয় নদী কমিশন। তারপর আর কাজ থামানো যায়নি। শরীফ জামিল বলেন, এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে টাস্কফোর্স নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এবং প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর নির্মাণ কাজ আবার শুরু হয়। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পরবর্তী চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহণের পর কমিশন সোনাই নদী পরিদর্শন করেন, সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স নদীর জাগায় দখল করে হচ্ছে এমনটা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত চিঠিও প্রেরণ দেয়। কিন্তু জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এই চিঠি অকার্যকর থেকে যায়।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে যে কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে, আমার এখানকার নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন, এই নদী কোম্পানি দখল করছে কেন, নদীতে কেন বর্জ্য নিক্ষেপ করেছে? নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এই দায়িত্ববোধ যাদের নেই, তাদের যদি চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়, তাহলে নদী রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ধরার কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সহ-আহ্বায়ক এম এস সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী,  শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী ও চুনতি রক্ষায় আমরার সমন্বয়ক সানজিদা রহমান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

Recent Comments