Home আন্তর্জাতিক ইমরান খানের সঙ্গে বেঈমানি করে নির্বাচনে হারলেন যারা

ইমরান খানের সঙ্গে বেঈমানি করে নির্বাচনে হারলেন যারা

দখিনের সময় ডেস্ক:
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কারাবন্দি নেতা ইমরান খান অনুগতরা বড় জয় পেয়েছেন। কিন্তু বিপদের সময় বেঈমানি করা নেতারা মুখ থুবড়ে পড়েছেন। পারভেজ খট্টক ও জাহাঙ্গীর তারিনরা কেউই জিততে পারেননি। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের প্রতি অনুগতরা, যাদের অনেকেই রাজনৈতিকভাবে একেবারে নতুন, ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে প্রভাবশালী প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়েছেন। এখন জোট সরকার গঠনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বেঈমানি করা রাজনীতিকরা দেশের শক্তিশালী চক্রের সমর্থন নিয়েও অপমানজনক পরাজয়ের শিকার হয়েছেন।
 ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই পিটিআই’র ওপর দমনপীড়ন শুরু হয়। এরপর গত বছরের ৯ মে দুর্নীতির মামলায় ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার জেরে সেদিন দেশব্যাপী জাতীয় নিরাপত্তা স্থাপনাগুলোয় হামলা হয়। এই হামলার কারণে পিটিআই রাষ্ট্রীয় রোষানলে পড়ে।
 ইমরানের দলকে আক্ষরিক অর্থে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে মুছে ফেলতে সব চেষ্টা করা হয়। দলের শীর্ষ নেতাসহ অনেক কর্মীকে কারাগারে ভরা হয়। দল পরিবর্তন বা রাজনীতি ছেড়ে দিতে চাপ দেয়া হয়। গণমাধ্যমে তাদের খবর প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। নজিরবিহীন এই দমনপীড়নের মধ্যেও অনেক নেতাকর্মীই ইমরানকে ছাড়েননি। কিন্তু ইমরান খানের এই বিপদের দিনে সুবিধাবাদী কিছু নেতা পিটিআই ত্যাগ করেন। কেউ নিজে দল গড়েন। আবার কেউ অন্য দলে যোগ দেন। সেই সময় ইমরানকে ত্যাগ করা খ্যাতনামা রাজনীতিকদের মধ্যে অন্যতম পারভেজ খট্টক। তিনি খাইবার পাখতুনখোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। পিটিআই ছেড়ে খট্টক পিটিআই-পার্লামেন্টারিয়ান (পিটিআই-পি) নামে দল গড়েন।
ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক জাহাঙ্গীর তারিন একসময় ইমরান খানের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। তিনিও পিটিআই ছাড়েন। গঠন করেন ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি)। স্পষ্টতই ক্ষমতাশালী চক্রের ইশারায় পিটিআই ত্যাগীদের দলে ভেড়াতে তিনি এই কাজ করেন। তবে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এই দুই নেতা বাজেভাবে হেরেছেন। পারভেজ খট্টক খাইবার পাখতুনখোয়ার নওশেরা এনএ-৩৩ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী শহিদ আহাদ খট্টকের কাছে হেরেছেন তিনি।
 আর জাহাঙ্গীর তারিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন পাঞ্জাবের মুলতানে এনএ-১৪৯ আসনে। তাকে ধরাশায়ী করেছেন পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ আমির দোগার। নির্বাচনী প্রচারের সময় খট্টক জোর গলায় বলেছিলেন, তিনি আবারও খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আর পিটিআইসমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও জয়ের পর তার সঙ্গে জোট করবেন।
 অন্যদিকে তারিনেরও অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। তার আইপিপি নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সঙ্গে আসন সমঝোতা চুক্তি পর্যন্ত করে। তারিন বলেছিলেন, তারা একত্রে কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গঠন করবেন। তবে তারিন হারলেও তার দল আইপিপি লাহোর থেকে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি তথা জাতীয় পরিষদের মাত্র দুটি আসন পেয়েছে। একটি আলিম খানের, অন্যটি আওন চৌধুরীর। তবে উভয়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী জয়কে আদালতে চ্যালেঞ্জ করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নিজের চেয়ার ঠিক রাখতেই ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা

দখিনের সময় ডেস্ক: জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...

সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: তোফায়েল

দখিনের সময় ডেস্ক: সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...

না ভোট ফিরিয়ে আনার সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

দখিনের সময় ডেস্ক: সরাসরি রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া, না ভোট ফিরিয়ে আনা ও অর্থের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ...

সুযোগ পেলে গলা চেপে ধরবে আ.লীগ: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: গণহত্যার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও, সুযোগ পেলে আবারও তারা মানুষের গলা চেপে ধরবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র...

Recent Comments