Home মতামত পার্লামেন্টারিয়ান সৃষ্টির পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে

পার্লামেন্টারিয়ান সৃষ্টির পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে

এটি পরিষ্কার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার সুমনসহ দু-চারজন ছাড়া বাকি সবাই প্রচলিত রাজনীতির চলতি হাওয়ার পন্থি।  আর কে না জানে, প্রচলিত ধারার রাজনীতিতে প্রাপ্তিযোগই হচ্ছে মূল কথা। ফলে স্বতন্ত্র এমপিরা সংসদে জোরালো ভূমিকা রাখবেন, নিদেনপক্ষে চেষ্টা করবেন- এ আশা করলে সেটা কাঁঠালের আমসত্ত্বের মতো হয়ে যেতে পারে। ফলে বাস্তবতা হচ্ছে, ক্ষমতার কেন্দ্র যেভাবে চাইবেন সেভাবেই করবেন মাননীয় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। যেমন, কোটা অনুসারে ৬২ স্বতন্ত্র এমপির সঙ্গে ‘মতৈক্য’ হওয়ায় ভাগের ১০ আসনে মহিলা এমপি মনোনয়নের দায়িত্ব আওয়ামী লীগপ্রধানের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন আসমানি বাণীর মতো গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে, এখানে গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করার জন্য এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে, সংসদকে সুন্দর ও কার্যকর করার জন্য, প্রাণবন্ত করার জন্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ এর আগে ৬২ স্বতন্ত্র এমপির প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তোমরা কেউ আমার ডান হাত, কেউ আমার বাম হাত। সবাই তো আমার। বাংলাদেশই আমার। আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, জাতির পিতার মেয়ে, বাংলাদেশই আমার, আমি বাংলাদেশকে ধারণ করি।’ সরকারপ্রধানের এই ‘আমার বলয়’ থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা সংসদীয় কার্যক্রমে কি বেরিয়ে আসতে পারবেন? এ অবশ্য দেখার বিষয়, অপেক্ষা করতে হবে। তবে সূচনাই বলে দেয়, বাকি সময় কেমন যাবে। এরপরও কী কারণে যে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কাছে অতি প্রত্যাশা করা হয়, তা অনুধাবন করা কঠিন।
তবে এরশাদ সরকারের সময় সংসদে আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে বিরোধী দলকে বলা হতো গৃহপালিত বিরোধী দল। কেউ কেউ আবার সে সময় সংসদ নিয়ে মার্কসের উক্তি কোড করতেন। কেবল জেনারেল এরশাদ বলে কথা নয়, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ও সংসদে জাতীয় পার্টিও গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পেয়েছে। দেখা যাক, দ্বাদশ সংসদে সংখ্যায় রেকর্ড সৃষ্টিকারী স্বতন্ত্ররা কী রেকর্ড সৃষ্টি করেন অথবা কোন তকমা পান। তবে আগের চেয়ে খুব একটা হেরফের হবে বলে মনে হয় না।
বেশি প্রত্যাশা করাটা আসলে বাস্তবতার সঙ্গে যায় না। অথচ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সূচনাতেই আওয়ামী লীগ ব্রাকেটে বন্দি না করে উন্মুক্ত রাখলে অন্য রকমও হতে পারত। সে ক্ষেত্রে এই গ্রুপ থেকে হয়তো কয়েকজন দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান তৈরি হতে পারতেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সেই পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে।  যেমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রুদ্ধ করা হয়েছে জাতীয় নেতা সৃষ্টির বহতা ধারা। হয়তো একসময় দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান সৃষ্টির পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে, আলিবাবা চল্লিশ চোরের গুহা দ্বারের মতো।
# বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত, ১৬ ফেব্রুযারি ২০২৪।শিরোনাম,  “অতি প্রত্যাশার স্বতন্ত্র এমপি এবং বাস্তবতা”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হবিগঞ্জে মানহানির একটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন । বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আলীম...

সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা: ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

দখিনের সময় ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। সাময়িক...

বাউফলে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

বাউফল প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর বাউফলে কালাইয়া-বাউফল ও বরিশাল সড়ক অবরোধ করেছেন কয়েকশ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত দুই ঘন্টা দাশপাড়া...

Recent Comments