দখিনের সময় ডেক্স:
বরিশাল সদরের কাশিপুর বিল্লু বাড়ি এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা মুকুল বেগম। সঠিক বয়স বলতে না পারলেও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখেছেন বলে জানান তিনি। রতার আনুমানিক বয়স হবে ষাট বছর।
মুকুল বেগমের ছোট মেয়ে তারার বর্তমান বয়স (১৮)। এই মেয়ের যখন বয়স দেড়বছর তখন মুকুল বেগমের স্বামী দিনমজুর আকুব্বর খাঁ মৃত্যুবরণ করেন। আকুব্বর খাঁ খুবই দরিদ্র হওয়ায় স্ত্রী আর সন্তানদের জন্য তেমন কিছু রেখে যেতে পারেননি।
বড় মেয়ে লতাকে (রুপবান) বিয়ে দেন মুকুল বেগম। তবে ৪ বছর পূর্বে সেই স্বপ্নের সংসারে বিচ্ছেদ ঘটলে লতা চলে আসেন মা ও বোনের কাছে। এরপর তিনজনে মিলে বরিশাল সদরের কাশিপুর বিল্লু বাড়ি এলাকায় জনৈক এক ব্যক্তির জমিতে কোনোভাবে তৈরি একটি টিনের ঘরে বিনাভাড়ায় থাকতে শুরু করেন।
লতা অন্যের কাছ থেকে পাওয়া সেলাই মেশিনে কাজ করে তিনজনের সংসারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে করোনা মহামারি শুরুর পর মাসহ দুইবোনের ওই সংসারে নেমে আসে নতুন এক অন্ধকার। উপার্জন কমে যেতে থাকলে পরিবারে দেখা দেয় অভাব অনটন। আর কয়েকদিন ধরে দেখা দেয় খাদ্য সংকট।
সংকটকালীন এ পরিস্থিতিতে অন্যের কাছ থেকে শুনে নিজেদের মোবাইল দিয়ে লতা কল দেন ৩৩৩ নম্বরে। ২-৩ দিন আগে দেওয়া এই কলটির মাধ্যমে তারা খাদ্য সহায়তা চাইলে গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে করোনাকালীন ঈদ উপহার নিয়ে হাজির হন লতাদের বাড়িতে।
যেখানে লতাদের অবস্থা দেখে, ঝুপড়ি ওই ঘরটিতে দাঁড়িয়েই তাদের সার্বিক বিষয়ে জানতে চান বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান। এ সময় লতা ও তার মা মুকুল বেগমের বর্ণনায় বেড়িয়ে আসে তাদের তিন নারীর দারিদ্রতার কথা। সঙ্গে সঙ্গে মো. মুনিবুর রহমান তাদের বসবাসের জন্য বিনামূল্যে একটি ঘর দেওয়ার কথা জানান। মুহূর্তেই জ্বলে ভেজা ছল-ছল চোখে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পরেন মা মুকুল বেগম ও তার দুই মেয়ে।