দখিনের সময় ডেস্ক ॥
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীসংখ্যা বাড়ানোয় গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য তারা নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা চাইছে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। এ জন্য দলের নেতাদের অধিক হারে প্রার্থী হওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা এমনটা জানিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনায় পড়েছে আওয়ামী লীগ। এ সমালোচনার বড় বিষয় হলো প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন এবং ভোটার উপস্থিতি কম হওয়া। ফলে
আওয়ামী লীগ দলের নেতাকর্মীদের জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। আওয়ামী লীগের যে কেউ চাইলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক নেতার মতে, দলের প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখার উদ্দেশ্য হলো নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। বেশিসংখ্যক প্রার্থী থাকলে ভোটার উপস্থিতি বাড়ারও সম্ভাবনা বাড়বে। কিন্তু অনেক উপজেলায় মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যরা নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার ফন্দি করছেন। এ বিষয়ে নানা অভিযোগ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কাছে আসায় তারা ক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দলের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে প্রকাশ্য সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকেও এসব অভিযোগের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও টাঙ্গাইল-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা নির্বাচনে আব্দুর রাজ্জাক তাঁর খালাতো ভাইকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব তালুকদারকে প্রার্থী ঘোষণা করেন। এমন ঘোষণায় প্রার্থী হতে আগ্রহী অন্য নেতারা ক্ষোভ জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি চান না মন্ত্রিসভার কোনো সদস্য, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতা উপজেলা পরিষদে কারো পক্ষে কাজ করুন। এ বিষয়ে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে কঠোর বার্তা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশনা পেয়ে ওবায়দুল কাদের একাধিকবার মন্ত্রী, এমপিদের উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে বলেছেন। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি মন্ত্রী, এমপি ও দলের নেতাদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অবৈধ হস্তক্ষেপ না করতে কঠোর নির্দেশনা দেন।