নির্বাচন থেকে দূরে থাকা বিএনপির একমাত্র ভরসা কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছে বিদেশ। পরিষ্কার করে বললে, আমেরিকা। বিএনপি এখন রাজনীতির চাতক পাখি। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা জাতীয় পার্টির অবস্থা ত্রাহি মধুসূদন! সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের রেখে যাওয়া এই দলটি বহু বছর ধরে আওয়ামী লীগের দয়ার কাঙাল। ধনবান ব্যক্তির অর্বাচীন সন্তান এতিম হলে যেরকম দশা হয়। সামগ্রিক এই বাস্তবতায় সুলতান সোলাইমানের দাপটে দেশ চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর নেপথ্যে কাজ করছে নানান কৌশল, নানান শক্তি।
কৌশল-অপকৌশলের তাত্ত্বিক আলোচনার বাইরে গিয়ে প্রশ্ন করা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার ভরকেন্দ্র আসলে কোথায়? জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদের ক্ষমতার উৎস ছিল ক্যান্টনমেন্ট। তাহলে আওয়ামী লীগের কোথায়? এ প্রশ্নে জবাব এককথায় দেওয়া কঠিন। এ নিয়ে নানান কথা প্রচলিত আছে। এর মধ্যে বিরোধী দলের অভিযোগ অনুসারে প্রধান হচ্ছে, ভারত। এর সঙ্গে সহায়ক শক্তি হচ্ছে বিভিন্ন গ্রুপের আমলা। বিপরীতে আওয়ামী লীগের দাবি অনুসারে, তাদের ক্ষমতার উৎস জনগণ।
এর মধ্য কোনটি সঠিক তা নিশ্চয়ই গভীর গবেষণার বিষয়। এ নিয়ে অতিসাধারণ একজন সাংবাদিকের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করা শোভন নাও হতে পারে। নিরাপদ তো নয়ই। এ বিষয়ে অন্য কারও কথা বা মতামত উদ্ধৃত করাও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে অতি বিনয়ের সঙ্গে এটুকু বলা যায়, পৃথিবীর কোথাও আসলে জনগণ ক্ষমতার উৎস নয়। ক্ষমতার উৎস কখনো বন্দুকের নল, কখনো আবার বিভিন্ন ক্ষমতাকেন্দ্র। যেখানে কৌশল ও সফলভাবে শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি হচ্ছে মুখ্য।
বলা বাহুল্য, গণতান্ত্রিক ছদ্মাবরণেও চলে কৌশল আর বলপ্রয়োগের খেলা। সফল হলে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, না হলে রাস্তায়। কারাগারে। এদিকে বন্দুকের জোরে সফল হলে সিংহাসন, না হলে ফাঁসির মঞ্চ। অথবা মাথায় গুলি। আমাদের দেশে হাতের কাছেই উদাহরণ, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, জেনারেল মঞ্জুরসহ অনেকে। ক্ষমতার খেলায় মসনদে আসীন হওয়ার এসব ধারায় জনগণের স্থান কোথায়? বাস্তবতা হচ্ছে, সেই প্রবচন—‘আমি কার খালু গো!’
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত ৩০ র্মাচ ২০২৪। শিরোনাম: ‘ক্ষমতার খেলায় জনগণ কার