দখিনের সময় ডেক্স ।।
বরিশালের মুলাদী উপজেলা সদরের সরকারি মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে সীমানার বাইরে ১৪ শতক জমি কেনা হয়েছিল ৫০ বছর আগে। কিন্তু দলিলপত্র কাছে না থাকায় এত বছর বিষয়টির খোঁজ করতে পারেনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ওই ১৪ শতক জমি ভোগদখল করছিলেন এই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক কাম অফিস সহকারী মফসের উদ্দীন ভূইয়া। জমির দলিলও ছিল তাঁরই কাছে। বিদ্যালয়ের পাশেই তাঁর বসতবাড়ি। তাঁর মৃত্যুর পর ওই জমি ভোগদখল করছিলেন তাঁর ছেলে কামাল ভূইয়া। কিন্তু সম্প্রতি ওই জমির ৬ শতক যুবলীগের স্থানীয় এক নেতা ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করে প্রাচীর তুলতে গেলে বের হয় জমির প্রকৃত মালিকানার বিষয়টি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৪০ সালে মুলাদী উপজেলা সদরে মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টি ৪ একর ২০ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৫ দিন আগে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ওরফে রবিন রাঢ়ীসহ তিনজন বিদ্যালয়ের সীমানার বাইরে বেদখল ওই ১৪ শতক জমির ৬ শতকের ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করে বালু ভরাট ও সীমানাপ্রাচীরের নির্মাণকাজ শুরু করেন।
দলিল ঘেঁটে দেখা যায়, মুলাদীর তেরচর গ্রামের প্রয়াত গহর আলী মল্লিক ও চানবরু বিবি তেরচর মৌজার ৪৯৯ খতিয়ানের ২৮৫৭ নম্বর দাগের ১৪ শতক জমি ১৯৬৫ সালে বিদ্যালয়ের নামে সাবকবলা দলিল রেজিস্ট্রি মূলে বিক্রি করেন। গ্রহীতা ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ আলী খান।
সূত্র জানায়, ওই জমি ক্রয়ের সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাম অফিস সহকারী ছিলেন মফসের উদ্দীন ভূইয়া। তাঁর কাছেই দলিল রক্ষিত ছিল। তাঁর বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় তিনি এবং তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে কামাল ভূইয়া ভোগদখল করে আসছেন। ৬ শতক জমিতে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বালু ভরাট করার পর কামাল ভূইয়া দলিলের একটি ফটোকপি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দেন।
রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, ওই খতিয়ানে প্রয়াত গহর আলী মল্লিকের আরও জমি ছিল। সেই সূত্রে তাঁর ওয়ারিশদের নামে রেকর্ড হয়। সেই রেকর্ড মূলে তিনিসহ তিনজনে মিলে ওয়ারিশ ফজলু মল্লিক, ইসমাইল মল্লিক ও সিদ্দিক মল্লিকের কাছ থেকে ৬ শতক জমি ক্রয় করেন। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়ার পর তাঁরা কাজ বন্ধ রেখেছেন।
কামাল ভূইয়া ১৪ শতক জমি তাঁদের ভোগদখলে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের ১০ শতক জমি আছে। তাই আমার বাবা ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এওয়াজ-বদল করেছিলেন। রফিকুল ইসলাম ওই জমি ভরাট করার পর আমার বাড়িতে এখন ৩-৪ শতক জমি দখলে থাকতে পারে।’ তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, কামাল ভূইয়া যে ১০ শতক জমি বিদ্যালয়ের দখলে আছে বলে দাবি করেছেন, সেই জমির দাতা বেলায়েত হোসেন মীর তাঁর (কামাল) বাবার কাছে বিক্রি করেন ১৯৭৮ সালে। এর আগে ওই ১০ শতকসহ ৩৬ শতক জমি বিদ্যালয়ের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল।