দখিনের সময় ডেস্ক:
গর্ভাবস্থা হলো একটি নয় মাসের প্রক্রিয়া যা তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত। এই পর্যায়গুলো ত্রৈমাসিক হিসাবে পরিচিত। প্রতিটি ত্রৈমাসিক তিন মাস নিয়ে গঠিত এবং শারীরিক রূপান্তর এবং চ্যালেঞ্জের বিভিন্ন ধাপ নিয়ে আসে। প্রথম ত্রৈমাসিক গর্ভাবস্থার প্রথম ১২ সপ্তাহকে বোঝায়, যা শিশুর বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের রেঞ্জ ১৪-২৭ সপ্তাহ, যেখানে তৃতীয় ত্রৈমাসিক ২৯ সপ্তাহ থেকে প্রসব পর্যন্ত স্থায়ী হয়, যা সাধারণত ৪০ সপ্তাহের কাছাকাছি হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলো প্রথম ত্রৈমাসিকের সময়য়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ মহিলারা ৫-৬ সপ্তাহের মধ্যে লক্ষণগুলো অনুভব করেন। এই সময়ে হবু মায়ের নিজের সর্বোচ্চ যত্ন নেওয়া এবং উপসর্গগুলো বুঝতে পেরে সে অনুযায়ী চলা গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে হবু মায়ের শরীরে অনেক পরিবর্তন হয়। এর মধ্যে রয়েছে-
* স্তনের পরিবর্তন
* ক্লান্তি
* ঘন ঘন মূত্রত্যাগ
* মেজাজ পরিবর্তন
* ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
* বমি বমি ভাব।
গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলো প্রতিরোধ করার কোনো উপায় নেই, কারণ এগুলো গর্ভাবস্থায় শরীরে ঘটে যাওয়া রূপান্তরের একটি অংশ। তবে উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করার এবং যাত্রা সহজ করার উপায় রয়েছে। মায়ো ক্লিনিকের মতে, মর্নিং সিকনেস প্রথম ত্রৈমাসিক জুড়ে এবং কখনও কখনও তার পরেও স্থায়ী হতে পারে। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের বিভিন্ন সমস্যা সহজ করার কিছু উপায় চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ডায়েট: ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাদ্যের দিকে মনোযোগ দিন। ক্লান্তি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য মোকাবিলায় হাইড্রেটেড থাকুন। অল্প পরিমাণে বার বার খান। এটি আপনার বমি বমি ভাব নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। আদা চা বা মিছরিযুক্ত আদা বেছে নিন, কারণ আদা বমি বমি ভাব বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত।
ওষুধ: শিশুর জন্মপূর্ব ভিটামিন ফলিক অ্যাসিড এবং আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে যা ভ্রূণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এসময় চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করুন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে কোনো ওষুধ খাবেন না।
সামগ্রিক সুস্থতা: এসময় ভালোভাবে বিশ্রাম নেওয়া, ৭-৮ ঘণ্টার ভালো ঘুম, স্ট্রেস লেভেল ন্যূনতম রাখা এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা অপরিহার্য। একটি স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্যতালিকা মেনে চলুন যাতে উচ্চ আয়রন এবং মাল্টিভিটামিন থাকে। তাহলেই নিজে সুস্থ থাকা এবং সুস্থ সন্তানের জন্ম দেওয়া সহজ হবে।