Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি বাবুল ও মুসা, দুই ভয়ংকর চরিত্র!

বাবুল ও মুসা, দুই ভয়ংকর চরিত্র!

দখিনের সময় ডেক্স:

অপরাধ জগতের দুই ভয়ংকর চরিত্র। একজন বাবুল আক্তার। অপরজন কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা। প্রথম জন ছিলেন পুলিশের চাকুরীতে, দ্বিতীয় জন ছিলেন পুলিশের কথিত সোর্স। দুজনই ছিলেন ভয়ংকর অপরাধী। মাহমুদা খানম মিতু হত্যার পাচ বছর পর বেরিয়ে আসছে এদের অপরাধের ভয়ংকর চিত্র।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সড়কে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। সে সময় মিতু হত্যায় তার স্বামী একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জঙ্গি হামলার অভিযোগ আনেন এবং তিনি কাউকে আসামি হিসেবে চিহ্নিত করেননি। মূলত তিনি একাধিক জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করায় সহজে এই হত্যাকাণ্ডকে জঙ্গি হামলা বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টা করেন। এখন সে হত্যামামলার প্রধান আসামী রয়েছেন পুলিশ হেফাজতে।

এদিকে মিতু হত্যার প্রধান ঘাতক মুছা পাঁচ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’। বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে তাদের ভয়ংকর ইতিবৃত্ত। আর এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন খোদ ঘাতক মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার। মিতু হত্যার অন্যতম আসামি পুলিশের এক সময়ের সোর্স কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসার স্ত্রী পান্নার দাবি, বাবুল তার স্বামীকে দিয়ে মিতুকে খুন করতে বাধ্য করেন। হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল মুসাকে বারবার সাবধানে থাকতে বলেছেন। মুসাকে শেল্টার দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন পুলিশের সেই সময়কার ক্ষমতাধর এই কর্মকর্তা। মুসার স্ত্রী বলেন, সন্তান, পরিবার ও আমার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আগে কথা বলিনি। আমি বাবুল আক্তারকে ভয় করতাম। বাবুল আক্তারের পরিচিত কিছু পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার পর থেকে আমাকে হুমকি দিতেন, আমি তাদেরকে ভয় পেতাম।

মুসা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্বীকার করে তার স্ত্রী বলেন, মুসা এ ঘটনায় জড়িত; সেজন্য ভয় পেতাম। সব মিলিয়ে আমি আগে মুখ খুলিনি। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? আজ পাঁচ বছর আমার স্বামী নিখোঁজ। তার সন্ধান চাই আমি। মামলার জন্য হলেও তো মুসাকে দরকার। কারণ সে সবকিছু জানে। পান্না আক্তারের ভাষ্য, মিতু হত্যাকাণ্ডের পর আমার বাড়িতে পুলিশ এসেছিল। তারপর আমি এ হত্যার বিষয়ে মুসার কাছে কয়েকবার জানতে চেয়েছিলাম। প্রথমে মুসা কিছু বলেনি। পরে এক সময় মুসা আমাকে জানায়, বাবুলের নির্দেশে সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত হতে বাধ্য হয়েছে।

স্ত্রী পান্না গণমাধ্যমকে বলেন, আমি মুসার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তোমরা কেন এমন একটি জঘন্য কাজ করলে? এখন আমার সন্তানদের কী হবে? আমার কী হবে? তখন মুসা জানিয়েছিল, বাবুল আক্তার তাকে শেল্টার দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাবুল আমার স্বামীকে চিন্তা না করতে বলেছেন। কিন্তু তারপর আমার স্বামীকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। সেখান থেকে আজ পাঁচ বছর আমি মুসার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমি মুসার খোঁজ চাই।

মুসার স্ত্রী দাবি করেন, ঘটনার পর ২০১৬ সালের ২৫ জুন তিনি একটি সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবুল আক্তারের ঘনিষ্ঠ দুই কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করতে নিষেধ করেছিলেন। তারপরও তিনি ওই বছরের ৫ জুলাই আবার সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলেন। তখনও করতে দেয়া হয়নি। সে সময় তিনি বাবা ও শ্বশুরের বাড়ি রাঙ্গুনিয়াতে থাকতেন। পান্নার ভাষ্য, আমাকে চট্টগ্রামও যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। আমি এ ব্যাপারে কথা বললে আমাকে জঙ্গি বানিয়ে গ্রেপ্তার করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়েছিল। আমি প্রচণ্ড ভয়ে থাকতাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments