Home বিশেষ প্রতিবেদন মিশুক প্রতিস্থাপনে অনিয়ম, সিন্ডিকেট চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কাড়িকাড়ি টাকা

মিশুক প্রতিস্থাপনে অনিয়ম, সিন্ডিকেট চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কাড়িকাড়ি টাকা

আলম রায়হান:
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিআরটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারী আর দালালরা মিলে প্রায় ১ হাজার ৮০০ মিশুক প্রতিস্থাপনের কাজ করেছে। প্রতিটি প্রতিস্থাপনের জন্য নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে শুধু প্রতিস্থাপনের কাজটি করেই এই চক্রটির সদস্যরা হাতিয়ে নিয়েছে ২৫-৩০ কোটি টাকা। আর এ অনিয়মের ফলে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত মিশুক মালিকরা। তাদের মধ্যে ক্ষুব্ধ কয়েকজন ইতিমধ্যে ফৌজদারি আইনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন।
রেজিস্ট্রেশন ছাড়া একটি নতুন সিএনজি অটোরিকশা বিক্রি হয় কমবেশি ৪ লাখ টাকায়। কিন্তু ঢাকার রেজিস্ট্রেশন থাকে তাহলে একলাফে দাম ওঠে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা। রাজধানীতে তাই একটি অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন যেন সোনার হরিণ। এই সুযোগটিই কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে (বিআরটিএ) ঘিরে গড়ে ওঠা একটি সিন্ডিকেট চক্র।
রাজধানীর এই ১ হাজার ৮০০ অটোরিকশার প্রতিস্থাপন নিয়ে বিআরটিএ ও মধ্যস্বত্বভোগীদের একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ প্রতিস্থাপনের তালিকায় স্থান পেতে গেলেও এই সিন্ডিকেটের মাধ্যম হয়ে যেতে হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এফিডেভিট দিয়ে মিশুক প্রতিস্থাপনের নামে শত শত অটোরিকশা মালিক হয়ে গেছে সিন্ডিকেটটির লোকজন। প্রতিটি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেন হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে গত কয়েক বছরে মোট ১ হাজার ৮০০ মিশুকের প্রতিস্থাপন করে ২৫-৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় সিন্ডিকেট সদস্যরা।
এ প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিআরটিএর সাবেক উপপরিচালক মাসুদুর রহমান, বর্তমান উপপরিচালক (ঢাকা বিভাগ) শফিকুজ্জামান ভূঞা, সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও সাবেক সহকারী পরিচালক শামসুল কবির জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বরকত উল্লা বুলু, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, মহিউদ্দিন আহমেদ, জাকির হোসেন ও কমল কুমার রায়সহ আরও অনেকেই জড়িত রয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অটোরিকশা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নিজে ও তার আত্মীয়স্বজন মিলে ১০০টি মিশুক প্রতিস্থাপন করে নিয়েছেন। আর বরকত উল্লা বুলু নিজ নামে ৪৬টি প্রতিস্থাপন নাম্বার নিয়েছেন। তাদের মাধ্যমে দিগন্ত অটো নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক অমল কুমার রায় (গৌতম) নিয়েছেন মোট ৩০টি প্রতিস্থাপন নাম্বার। এর মধ্যে ১৬টি নিজ নামে আর বাকি ১৪টি নিয়েছেন স্ত্রী কাজল রানী রায়ের নামে। এসব ব্যক্তি সবগুলো মিশুকের ক্ষেত্রে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত দেখাতে পারেননি। বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশে শুধু একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মূল মালিকের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে মালিক দেখিয়েছেন। বিআরটিএর দাপ্তরিক মালিকানা সংক্রান্ত বইয়ে তাদের নাম নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর ‍এবারের চীন সফর

দখিনের সময় ডেস্ক: আগামী আট থেকে এগারোই জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বেইজিং যাচ্ছেন। ভারত সফরের পরপরই চীন সফরকে ভূরাজনৈতিক অবস্থান ‍এবং...

গাজী গ্রুপে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পাবেন ভ্রমণ ভাতা

দখিনের সময় ডেস্ক: গাজী গ্রুপ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি টেরিটরি সেলস ম্যানেজার/এরিয়া সেলস ম্যানেজার পদে জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ০২ জুলাই থেকেই...

যমুনা গ্রুপে জব সার্কুলার, আবেদন শেষ ৩১ জুলাই

দখিনের সময় ডেস্ক: যমুনা গ্রুপে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির আর্কিটেক্ট বিভাগ সিনিয়র ম্যানেজার/এজিএম পদে জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ০৩ জুলাই থেকেই আবেদন...

ব্যবহারকারীদের লোকেশন হিস্ট্রি মুছে ফেলবে গুগল

দখিনের সময় ডেস্ক: বর্তমানে সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন প্রতি মুহূর্তে। ফলে অজানতেই অনেক ব্যক্তিগত তথ্য জমা হয়ে যাচ্ছে গুগলে। যার মধ্যে রয়েছে গুগল লোকেশনও। যদিও...

Recent Comments