মশিউর রহমান তাসনিম ও খালিদ সাইফুল্লাহ:
বরিশাল সদর উপজেলা কার্যালয় চত্বরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার(১৮আগস্ট) রাত সাড়ে এগারোটার দিকে এসময় দুইজন পুলিশসহ অনেকে আহত এবং অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানাগেছে। গুলীবিদ্ধদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে সূত্র জানিয়েছে।
উপজেলা চত্বরে ব্যানার টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়ছে বলে জানাযায়। কয়েকঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালেও গুলী বর্ষণ করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। ঘটনার পর ইউএনও’র নিরাপত্তায় গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউএনও মুনিবুর রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার-পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বৃহস্পতিবার সকালে এগুলো ছিঁড়তে বলেন। এরপর তারা তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ইউএনওর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
রাত সাড়ে ১০টা এবং ১১টায় দুই দফায় তারা হামলা চালায় বলে জানান ইউএনও মুনিবুর রহমান। প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারী নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার শুভেচ্ছা ব্যানার অপসারণের কাজ শুরু করে। এসময় ইউএনওর কার্যালয় ও সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাঁদের পরিচয় জানতে চান। এর পর তাঁরা সকালে এসে কাজ করার জন্য বলেন। এসময় সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বাকবিতণ্ডা হয়।
পরে খবর পেয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান আহেমদ ওরফে বাবুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের জেলা কমিটির সহসভাপতি আতিকুল্লাহ খান মুনিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব খান, সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতসহ শতাধিক নেতাকর্মী সেখানে যান। পরে সেখানে আনসার সদস্যদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। তখন নেতাকর্মীরা ইউএনওর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
হামলা ও সংঘর্ষের পর বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত অভিযোগ করেন, ইউএনওর নির্দেশে আনসার সদস্যরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়েছে। এতে অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের কোনো পদে নেই, এমন কারও ছবি সংবলিত পোস্টার বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় টানানো যাবে না মর্মে একটি নির্দেশনাকে ঘিরে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত।
সম্পাদনা: আলম রায়হান