Home বিশেষ প্রতিবেদন আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার পলায়ন, পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য দুঃসংবাদ

আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার পলায়ন, পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য দুঃসংবাদ

বিশেষ প্রতিনিধি:

আফগানিস্তান থেকে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের ছাড়িয়ে নিয়ে সটকে পড়লো, তা অনেকটা পলায়নের মতো বলে বিবেচিত হচ্ছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতার উপর এক বিরাট আঘাত বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে একটি মিত্রদেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা এবং বিশ্ব পরিসরে তাদের অবস্থান প্রশ্নের মুখে।

আফগানিস্তানে আমেরিকার বিপর্যয় পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য দুঃসংবাদ। আফগানিস্তানের এই বিপর্যয় থেকে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিপক্ষ নিশ্চিতভাবেই লাভবান হবে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটি, তা হলো, ওয়াশিংটনের মিত্রদের ওপর এর কী প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। বাইডেনের আফগানিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্তের পরিণাম হবে সুদূরপ্রসারী।

আফগানিস্তানে যা ঘটেছে তার তুলনা করা হচ্ছে ভিয়েতনামের সঙ্গে। শত্রুপক্ষের হাতে পতন ঘটছে এমন এক শহর থেকে মার্কিন নাগরিকদের হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে হচ্ছে- সংবাদপত্রগুলোর পক্ষে এরকম ছবি প্রথম পাতায় ছাপানোর লোভ সামলানো বেশ কঠিন। তবে বাস্তবে- এই দুটি ঘটনায় উপরে উপরে যত মিলই থাক- কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যও কিন্তু আছে। দক্ষিণ ভিয়েতনামের পতন ঘটেছিল মার্কিন সৈন্যরা চলে যাওয়ার দুই বছর পর। মনে হচ্ছে আফগানিস্তানের বেলায় যুক্তরাষ্ট্র আশা করেছিল, তারা চলে আসার পরও তাদের আফগান মিত্ররা মার্কিনীদের ছাড়াই আরও বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় ধরে টিকে থাকতে পারবে।

ভিয়েতনাম নিয়ে মার্কিন জনমত ছিল পুরোপুরি বিভক্ত, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মনোবল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু ভিয়েতনাম ছিল স্নায়ুযুদ্ধের এক বিয়োগান্তক সাইড শো। যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত এই স্নায়ুযুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিল। ভিয়েতনামের কারণে নেটো দুর্বল হয়নি। বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা এরপরও কিন্তু মার্কিন সাহায্য প্রত্যাশা করতে কোন দ্বিধা করেনি। বিশ্বের প্রধান এক পরাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থানে অটুট ছিল। কিন্তু আফগানিস্তানের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। আফগানিস্তান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রে যে ধরণের আভ্যন্তরীণ বিভেদ ছিল, তার সঙ্গে ভিয়েতনামের কোন তুলনাই চলে না। আফগানিস্তান মিশন নিশ্চয়ই অজনপ্রিয় ছিল, কিন্তু তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে কোন গণবিক্ষোভ দেখা যায়নি, যেটি ঘটেছিল ভিয়েতনামের বেলায়।

৭০-এর দশকের আন্তর্জাতিক পটভূমির সঙ্গে আজকের পটভূমির বিরাট ফারাক আছে। যুক্তরাষ্ট্র- বা আরও সাধারণভাবে বলতে গেলে পশ্চিমা বিশ্ব অনেকগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত, যার কোন কোনটিতে তারা সুস্পষ্টভাবে বিজয়ী হয়েছে।

আফগানিস্তানে যা ঘটেছে তার তুলনা করা হচ্ছে ভিয়েতনামের সঙ্গে। শত্রুপক্ষের হাতে পতন ঘটছে এমন এক শহর থেকে মার্কিন নাগরিকদের হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে হচ্ছে- সংবাদপত্রগুলোর পক্ষে এরকম ছবি প্রথম পাতায় ছাপানোর লোভ সামলানো বেশ কঠিন। তবে বাস্তবে- এই দুটি ঘটনায় উপরে উপরে যত মিলই থাক- কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যও কিন্তু আছে।

সম্পাদনা: আলম রায়হান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-আমেরিকান কিশোর হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল

দখিনের সময় ডেস্ক: এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমেরিকান-ইহুদি কিশোর (১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী) 'আমি হামাসের সাথে সহানুভূতিসম্পন্ন'- এমন বক্তব্যের সাথে একমত। ইসরাইলের একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে...

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

Recent Comments