Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি শেয়ার ব্যবসায় নিঃস্ব, প্রশ্নফাঁসে কোটিপতি

শেয়ার ব্যবসায় নিঃস্ব, প্রশ্নফাঁসে কোটিপতি

দখিনের সময় ডেস্ক:

শেয়ারবাজারে ধসের ঘটনায় এক রকম নিঃস্ব হয়ে যান মিজানুর রহমান মিজান। হঠাৎ তার সঙ্গে রাশেদ আহমেদ বাবুল ও মুবিনের পরিচয় হয়। লাভ আর লোভে তাদের কাছ থেকে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কিনে কয়েকগুণ দামে বিক্রি করতেন মিজান। বছর না ঘুরতেই বিপুল অর্থের মালিক হয়ে যান মিজানুর রহমান মিজান।

পুলিশ বলছে, সমন্বিত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসচক্রে বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরের পাশাপাশি উপসচিব পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তার সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করছেন। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত ৫ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ৩৫ লাখ টাকায় কিনে কয়েকগুণ দামে তা চক্রের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জাহিদের কাছে বিক্রিও করেছিলেন মিজান। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় আত্মগোপনে চলে যান চক্রের সদস্যরা। গত রবিবার মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাবুল ও মুবিনও বর্তমানে গোয়েন্দা পুলিশের জালে রয়েছেন। গত রবিবার পর্যন্ত মিজানসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার করা হয় ব্যাংক নিয়োগের প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্ব পাওয়া আহছান উল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন কর্মচারী দেলোয়ার, পারভেজ ও রবিউলকে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তার ১৪ জনের মধ্যে ৫ জন রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকে কমর্রত ছিলেন। চাকরির পাশাপাশি তারা নিয়মিত সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে বিপুল টাকার মালিক হয়েছেন।

আহ্ছান উল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহকারী দেলোয়ার গ্রেপ্তার হওয়ার পর ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে তার ভগ্নিপতি মুবিনকে প্রশ্নপত্র দিতেন বলে জানিয়েছিলেন। মুবিন সেই প্রশ্ন নিয়ে বিক্রি করতেন মিজানের কাছে। মূলত আহছানিয়া মিশন এবং আহ্ছান উল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারীরা প্রতিটি প্রশ্ন ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। আর সেই প্রশ্ন হাত বদলে দাম উঠত ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত। জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা সোহেল রানা ১৭৫ জনের কাছে ১০ লাখ টাকা করে প্রতিটি প্রশ্ন বিক্রি করে প্রায় ২০ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

সর্বশেষ সমন্বিত ৫ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন রাশেদ আহমেদ বাবুল ও মুবিনের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকায় তিনি কিনে নেন। পরে তিনি সেই প্রশ্ন জাহাঙ্গীর আলম জাহিদের কাছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় বিক্রির জন্য চুক্তি করেন। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তি ও গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মিজান জানিয়েছেন, জাহিদ তার কাছ থেকে প্রশ্ন কিনে জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল রানার কাছে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকায় বিক্রির জন্য চুক্তি করেছিলেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের পর যতবার হাত বদল হয়, তত দাম বাড়তে থাকে। শেষ ধাপে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে প্রতিটি প্রশ্নপত্র ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে বিক্রি করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

শিবিরের ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা শিগগিরই: শিবির সভাপতি

দখিনের সময় ডেস্ক ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, দু-একদিনের মধ্যে সেক্রেটারিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। গতকাল শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে...

সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার

দখিনের সময় ডেস্ক সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরীকে রাজধানীর আদাবর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার রাজধানীর...

শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

দখিনের সময় ডেস্ক: কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপে বাড়ির সামনে থেকে তাহমিনা আক্তারের (৭) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত...

স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, থানায় এসে স্বামীর আত্মসমর্পণ

দখিনের সময় ডেস্ক: রাজধানীর পল্লবীতে শামসুন্নাহার (৫২) নামের এক নারীকে নিজ হাতে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার স্বামী। ঘাতক স্বামীর নাম মোখলেছুর রহমান (৫২)।...

Recent Comments