Home অন্যান্য নির্বাচিত খবর চেয়ারম্যানের মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর জালিয়াত, অবশেষে হাজতবাস

চেয়ারম্যানের মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর জালিয়াত, অবশেষে হাজতবাস

স্টাফ রিপোর্টার:

জালিয়াত শহিদুল ইসলাম হাওলাদার। তার প্রকাশ্য পরিচয়, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। কিন্তু এটি তার মুখোশ। আসলে সে ভযংকর জালিয়াত। সে উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনও নিয়েছিলো। কিন্তু ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। শেষ রক্ষা হলো জালিয়াত শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের। জালিয়াতি মামলায় শহিদুল ইসলাম হাওলাদারসহ পাঁচজনকে ২ ফেব্রুয়ারী কারাগারে যেডতেই হলো।

প্রথমে হাজতে যাওয়া ঠেকাবার চেষ্টা করেন জালিয়াত শহিদুল ইসলাম হাওলাদার। এর পর তার ছবি যাতে তোলা না হয় সে জন্য চেষ্টা করেন মরিয়া হয়ে। এ জন্য তার বাজেট ছিলো লাখ টাকা। কিন্তু টের পেলো, টাকা দিয়ে সাংবাদিক কেনা যায় না। এ অবস্তায় তার পেটোয়া বাহিনী লেলিয়ে দেয়া হলো। গুরুতরভাবে আহত হলো অন্তত ২৫ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে ১৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানাগেছে, দাড়িয়াল ইউনিয়নের বাসিন্দা নরেন্দ্র নাথ পাল ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ৬০২ শতাংশ জমির দখলে ছিলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওই জমি আত্মসাৎ করতে ২০১৫ সালে একটি জাল নিলাম ডিক্রি সৃষ্টি করেন। ২০১৬ সালে ওই জাল ডিক্রি উপস্থাপন করে জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। নরেন্দ্র পাল জানতে পারেন শহিদুল ইসলাম তার ৩ একর ৫৩ শতাংশ জমি জাল দলিল দিয়ে মালিকানা করিয়ে নেন। বাকি জমি আত্মসাৎ করতে নরেন্দ্র পালের দুই ফুফু জয়া ও গীতা পাল এবং হেমায়েত হোসেন নামে আরেকজনের নাম ব্যবহার করে একটি সাব কবলা দলিল তৈরি করেন; যা সাতক্ষীরা সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সম্পাদন দেখানো হয়।

এছাড়া জাল পর্চা সৃষ্টি করে ২০১৬ সালে ওই জমির রেকর্ড সংশোধন করার চেষ্টা করে ভূমি অফিস থেকে ব্যর্থ হন। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন নরেন্দ্র পাল।

আদালত মামলা তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন। ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিআইডির পরিদর্শক মো. সেলিম ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ সময় আব্দুল মোতালেব নামে এক আসামি মৃত্যুবরণ করলে তার অব্যাহতি চাওয়া হয় প্রতিবেদনে। আদালত চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর মামলার ধার্য তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। তবে ২২ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ ৭ জন উচ্চ আদালত থেকে ৬ মাসের আগাম জামিন নেন।

বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক নামঞ্জুর করেন। এর আগে মঙ্গলবার (০১ ফেব্রুয়ারি) মামলার অপর দুই আসামি বিনোদ বিহারী পালের মেয়ে জয়া রানী পাল ও গীতা রানী পালকে কারাগারে পাঠান আদালত।

কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- দাড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, আবুল হোসেন  হাওলাদার, তহিদুল ইসলাম হাওলাদার ও সাহানুর বেগম। এই মামলায় আরও দুই আসামি পলাতক আছেন।

প্রসঙ্গত, বুধবার আদালত প্রাঙ্গণে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন আইনজীবী সহকারীরা ও চেয়ারম্যানের সহযোগীরা। এতে ১৮ জন সাংবাদিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নিজের চেয়ার ঠিক রাখতেই ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা

দখিনের সময় ডেস্ক: জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...

সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: তোফায়েল

দখিনের সময় ডেস্ক: সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...

না ভোট ফিরিয়ে আনার সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

দখিনের সময় ডেস্ক: সরাসরি রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া, না ভোট ফিরিয়ে আনা ও অর্থের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ...

সুযোগ পেলে গলা চেপে ধরবে আ.লীগ: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: গণহত্যার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও, সুযোগ পেলে আবারও তারা মানুষের গলা চেপে ধরবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র...

Recent Comments