ইয়াছিনুল ঈমন, ভোলা প্রতিনিধি
ভোলা সদর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে আব্দুল জাব্বার নামের এক যুবককে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এসময় সন্ত্রাসীরা আব্দুল জাব্বারের গলায়, মুখে, মাথায় ও পিঠে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। আব্দুল জাব্বারকে বাাঁচাতে গিয়ে তাঁর ভাই আবুল খায়েরও সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় রাতেই তাকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়। আহত আব্দুল জাব্বার উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানা ইউছুফের ছেলে।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ওই ইউনিয়নের উত্তর পশ্চিম চরনোয়াবাদ নতুন মসজিদের কাছে এ ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয়রা হামলাকারী শিহাব ওরফে পারভেজকে আটকে রেখে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। আটক শিহাব ওরফে পারভেজ ভোলা পৌরসভা ৫নম্বর ওয়ার্ডের কালিনাথ বাজার এলাকার আবুল কালামের ছেলে।
আহত আব্দুল জাব্বারের ভগ্নিপতি মো. আনোয়ার জানান, সন্ধ্যার পর মাগরিবের নামাজ পড়ে আব্দুল জাব্বার এলাকার মসজিদ থেকে বের হলে সেখানে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী শিহাব ওরফে পারভেজ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর ওপর ধারালো ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। এসময় শিহাব আব্দুল জাব্বারকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে। এতে তার গলা কেটে যায়। এর পর হামলাকারী ছুরি দিয়ে আব্দুল জাব্বারকে এলাপাথারি মুখে, মাথায় ও পিঠে আঘাত করতে থাকে। পরে আব্দুল জাব্বারের ডাকচিৎকারে তাঁর ভাই আবুল খায়ের ছুটে এসে তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে আহত করে শিহাব। পরে স্থানীয়রা শিহাবকে আটকে রেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে। এবং হামলায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে।
তিনি আরো জানান, শিহাবের ছুরির আঘাতে আব্দুল জাব্বারের গলায় প্রায় ১৪টি সেলাই লেগেছে। এছাড়াও ধারালো ছুরির আঘাতে তার মুখ, মাথা ও পিঠে গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসাপাতালে পাঠায়। তাঁর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।
আনোয়ার অভিযোগ করে বলেন, ভোলার স্থানীয় ঠিকাদার মাহমুদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতো আব্দুল জাব্বার। চাকুরী করা অবস্থায় বিভিন্ন দোকান থেকে প্রায় ১৬ লাখ টাকার মালামাল বাকিতে এনে মাহমুদরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে দেয়। সেখানের চাকুরী ছেড়ে দিলে মাহমুদের কাছ থেকে আব্দুল জাব্বার ওই ১৬ লাখ টাকা পাওনা হয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরের মধ্যস্থতায় সেই ১৬ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হয় মাহমুদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহমুদ তাঁর ভায়রার ছেলে শিহাব ওরফে পারভেজকে দিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হামলাকারী শিহাব ওরফে পারভেজকে ঘটনাস্থল থেকে হামলায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরিসহ আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আহত আব্দুল জাব্বারের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। তবে কি কারনে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি এ কর্মকর্তা।
Post Views:
67