Home শীর্ষ খবর উত্তরায় ১৪০০ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণ, খাসজমির চেয়ে ওয়াসার আগ্রহ বসতভিটায়

উত্তরায় ১৪০০ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণ, খাসজমির চেয়ে ওয়াসার আগ্রহ বসতভিটায়

উত্তরা প্রতিনিধি:

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের ধউর ও নলভোগ মৌজায় পয়ঃশোধনাগার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। প্রকল্প এলাকার পাশেই রয়েছে পুলিশ লাইন্স, আহসানিয়া মিশন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া পাশেই রয়েছে মেট্রোরেল ডিপো। প্লান্ট স্থাপন হলে এসব প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঝুঁকিতে পড়ে যাবে।

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় পয়ঃশোধনাগার স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। প্রায় ১ হাজার ৪শ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রাথমিক বাছাইয়ে যে জমি চূড়ান্ত হয়েছে, তা নিয়ে উঠেছে অসংখ্য অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, যে জমি চূড়ান্ত হয়েছে, তাতে প্রকল্প ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। যদিও পছন্দ করা জমির পাশেই রয়েছে খাসজমি। অন্যদিকে চূড়ান্ত হওয়া জমিতে উত্তরাধিকারসূত্রে বাস করে অসংখ্য পরিবার। রয়েছে শত শত আবাসিক ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প এলাকার মধ্যে রয়েছে রাজউক প্রণীত ‘ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানের’ (ড্যাপ) ১০০ ফুট রাস্তা। এটি তিনটি ওয়ার্ডের মানুষের চলাচলের প্রধান রাস্তা। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রাস্তাটি আর থাকবে না।

প্রকল্পটি জনবহুল আবাসিক এলাকা থেকে সরিয়ে খোলা জায়গায় নিতে স্থানীয় কাউন্সিলর, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। বিশেষ করে ভূমিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে তারা বলছেন, প্রকল্পটি আবাসিক এলাকা থেকে সরিয়ে যথাক্রমে গ্রাম ভাটুলিয়া, আশুতিয়া ও ধউর মৌজার একাংশের প্রস্তাবিত জায়গায় বাস্তবায়ন করা হোক। এটি সম্পূর্ণ খোলা জায়গা। এখানে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন জনগণের কোনো সমস্যা হবে না, তেমনি অধিগ্রহণ বাবদ কয়েক শ কোটি টাকার সাশ্রয় হবে। চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, জনবহুল আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে স্যুয়ারেজ লাইন জনগণের ভোগান্তি বাড়বে এবং সেখানকার বাসিন্দারা বসতভিটা হারাবে।

এসব জমিতে পয়ঃশোধনাগার স্থাপিত হলে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয়ের প্রায় অর্ধেকই কমে যাবে। কারণ জনবহুল আবাসিক এলাকায় প্লান্ট হলে উচ্ছেদ হবে বিশাল এক জনগোষ্ঠী- যেখানে বড় বড় আবাসিক ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব জমি, ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিপূরণ বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করতে হবে ওয়াসাকে।

প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল লতিফ বলেন, প্রকল্পটি এখনো ভূমি মন্ত্রণালয়ে আছে। এখানে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজউকের ১০০ ফুট রাস্তা থাকবে। রাস্তাটি কেবল একটু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খাসজমি থাকতে আবাসিক এলাকার জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, খাসজমি রয়েছে, আমরা প্রথম দিকে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ওই জমি অন্যদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, সরকারের যে সংস্থা এসব বিষয় দেখে, তারা স্টাডি করে দেখেছে বর্তমান জায়গাটিতেই ভালো হবে। এখানেই মূল্য কম হবে। তাই তারা এটা চূড়ান্ত করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নিজের চেয়ার ঠিক রাখতেই ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা

দখিনের সময় ডেস্ক: জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...

সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: তোফায়েল

দখিনের সময় ডেস্ক: সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...

না ভোট ফিরিয়ে আনার সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

দখিনের সময় ডেস্ক: সরাসরি রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া, না ভোট ফিরিয়ে আনা ও অর্থের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ...

সুযোগ পেলে গলা চেপে ধরবে আ.লীগ: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: গণহত্যার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও, সুযোগ পেলে আবারও তারা মানুষের গলা চেপে ধরবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র...

Recent Comments