বিশেষ প্রতিনিধি:
অবহেলা এবং নানান সংকটে নিমজ্জিত মানসিক স্বাস্থ্য খাত। এদিকে বাস্তবতা হচ্ছে, পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না গেলে কাউকে মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয় না। সারাদেশে মানসিক রোগের চিকিৎসা দেয়ার জন্য পর্যপ্ত সুযোগ সুবিধা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার দিকটি বড় অবহেলার শিকার।
বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ও ২০০৫ সালে সর্বশেষ যে জাতীয় সমীক্ষা দুটি হয়েছে তার ফলাফল অনুযায়ী মোট জনগোষ্ঠীর প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে অন্তত একজন কোন না কোন মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত, যার চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন। অথচ মোট দুটি বিশেষায়িত মানসিক হাসপাতাল সহ সব মিলিয়ে দেশটিতে রয়েছে মোটে ৮শর মত শয্যা, ২শর সামান্য বেশী মানসিক চিকিৎসক আর ৫০ জনের মতো ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, বলছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার হেলাল উদ্দিন আহমেদ।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের দেয়া তথ্যে বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮.৫ শতাংশ এবং শিশু কিশোরদের ১২.৬ শতাংশ কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত। কুসংস্কার অজ্ঞতা আর সুযোগ কম থাকায় মানসিক রোগীদের শতকরা ৯২ ভাগই থাকেন চিকিৎসা সেবার বাইরে। মানসিক রোগের চিকিৎসায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং পাবনা মানসিক হাসপাতালের বাইরে মেডিকেল কলেজগুলোতে কিছু চিকিৎসা সুবিধা আছে যা পর্যাপ্ত নয়।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং পাবনা মানসিক হাসপাতালের দীর্ঘসময় পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক হেদায়েতুল ইসলাম। বাংলাদেশে অর্ধশতাব্দীর বেশি মানসিক চিকিৎসা সেবার সঙ্গে যুক্ত এই বিশেষজ্ঞ জানান মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র হিসেবে ১৬৮টি বেসরকারি ক্লিনিক মানসিক রোগেরও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে যেগুলো মানসম্মত নয়। এদিকে যেটুকু সুযোগ সুবিধা আছে সেখানে মানসিক রোগের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে যথাযথ নজরদারির প্রশ্ন রয়েছে। সেটি যথাযথ হচ্ছে না সেটি পুলিশ কর্র্মতার মৃত্যুর ঘটনায় স্পষ্ট। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও স্বীকার করা করা হচ্ছে যে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় যথাযথ মনিটরিং সম্ভব হচ্ছে না।