দখিনের সময় ডেস্ক:
ওমানের মাসকাটে আটক হয়েছেন রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন সুমন শিকদার ওরফে মুসা। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তায় মুসাকে আটক করা হয়।
শুটার মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ৬ জুন ওমান যাচ্ছে পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল। নির্দিষ্ট করে কোনো তারিখের বিষয়ে না বললেও তাঁর দাবি, আগামী সপ্তাহে তিন সদস্যের দল ওমানে যাবে।
একাধিক সূত্র বলছেন, টিপু হত্যা মিশনের সব ঠিকঠাক করে ১২ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন মুসা। আন্ডারওয়ার্ল্ডে তিনি ‘শুটার মুসা’ নামে পরিচিত। জোড়া খুনের তদন্তে তার নাম আসার পরই নড়েচড়ে বসেছিলেন গোয়েন্দারা। এরপর দেখা যায় কিলিং অপারেশনের ১২ দিন আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে তিনি পালান। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশ থেকে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
মুসা প্রথমে দুবাই গেলেও পরে সেখান থেকে ওমান পালিয়ে যান। এরপর এনসিবি, ঢাকা ১০ মে এনসিবি, মাসকাটকে গ্রেফতারের অনুরোধ করে। পরে মুসাকে গ্রেফতারের বিষয়টি এনসিবি, মাসকাট ১৭ মে ঢাকা এনসিবিকে অবহিত করে। সবশেষ ৩০ মে পুলিশ সদর দফতর বিধি মোতাবেক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শাহিদুর রহমান, এডিসি রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সদর দফতরের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দীনের সমন্বয়ে একটি টিমকে ওমান যাওয়ার সম্মতি প্রদান করে।
জানা গেছে, সুমন শিকদার হিসেবে পাসপোর্ট নিয়েছেন মুসা। সেখানে বাবার নাম আবু সাঈদ শিকদার। মা জরিনা আক্তার। স্ত্রী নাসিমা আক্তার। গ্রাম কইখাইন, পরাইখারা, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। ইমিগ্রেশনের তথ্য বলছে, ভ্রমণ ভিসায় বৈধ পথেই দেশ ছেড়েছেন মুসা। একসময় মুসা মিরপুরকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী থাকলেও ধীরে ধীরে ঢাকায় নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামে কেবল পল্লবী ও মতিঝিল থানায় ১১টি হত্যা, অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কেবল পল্লবী থানায়ই ১০টি মামলা। সবশেষ শাহজাহানপুরে দায়ের করা টিপু হত্যা মামলার এজাহারে মুসার নাম না থাকলেও তদন্তে উঠে এসেছে তার জড়িত থাকার তথ্য।
টিপু হত্যার প্রধান শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ এরই মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে মুসার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী বিকাশ-প্রকাশের আস্থাভাজন হিসেবে আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার সুখ্যাতি রয়েছে। এদিকে মুসা আটকের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহত টিপুর স্ত্রী ও হত্যা মামলার বাদী ফারহানা ইসলাম ডলি।