Home নির্বাচিত খবর বৃদ্ধাশ্রমে কাঁদে বাবা, খোঁজ নেন না মেয়েরা!

বৃদ্ধাশ্রমে কাঁদে বাবা, খোঁজ নেন না মেয়েরা!

দখিনের সময় ডেস্ক:

ঈদের সময় আপনজনের সঙ্গে মিলিত হবার যে তীব্র বাসনা থাকে তার আলামত দৃশ্যমান হয় আপনজনের সঙ্গে মিলিত হবার ক্ষেত্রে মানুষের ঝুকির যাত্রার মধ্য দিয়ে। কিন্তু  এর বিপরীত দৃশ্যও আছে। এমন অনেক মানুষ আছেন, যাদের কাছে ঈদের সময়ও কোন আপনজন যায় না। অথচ এরা এক সময় সকলের বোঝা বহন করেছেন। সংসার নামক ঘানী টেনেছেন। ধরাযাক স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ সেলিমের কথাই।

রাজধানীর মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড অ্যাজ কেয়ার’ বৃদ্ধাশ্রমে ৫ বছর ধরে আছেন অসুস্থ সেলিম। দুই মেয়ে ও তাদের স্বামী চাকরি করেন। ৫ বছরে এক দিনের জন্যও বাবার খোঁজ নেননি মেয়েরা। বৃদ্ধাশ্রমেই ১০টা ঈদ কাটিয়ে দিয়েছেন। সেই কথা বলতে গিয়ে কাঁদছিলেন তিনি।

স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সুখের সংসার ছিল চট্টগ্রামের স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ সেলিমের। পড়াশোনা করানোর পর দুই মেয়েকে চাকরি দিয়েছেন।  ‘ভালো’ পাত্র দেখে  বিয়ে দিয়েছেন। সবকিছু সুন্দরভাবেই চলছিল, সুখের কোনো কমতি ছিল না। কিন্তিু স্ত্রীর মৃত্যুর পর পাল্টে যায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ সেলিমের জীবন। ঘিরে ধরে অসুস্থতা। হয়ে যান প্যারালাইজড। এরপরের জীবন যেন শুধুই কষ্টের। কেননা, চাকরিজীবী মেয়েরা চিকিৎসার কথা বলে বাবার অবসর-ভাতার সব টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। বাবাকে ফেলে গেছেন রাস্তায়। সেখান থেকে ঠাঁই হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে।

মোহাম্মদ সেলিমের দেওয়া তথ্যমতে, চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান। আর ২০১৪ সালে তার স্ত্রী মারা যান। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন থেকেই তিনি প্যারালাইজড। চলাফেরা করতে পারেন না।   তিনি জানান, ২০১৭ সালে তাকে ভারতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে চান তার দুই মেয়ে। তাদের কথায় এত দিনের জমানো সব টাকা মেয়েদের হাতে তুলে দেন। সেই টাকা নিয়ে দুই মেয়ে বাবাকে ফেলে যান চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারে। গণমাধ্যমে সেই খবর পেয়ে স্কুলশিক্ষককে নিয়ে আসে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড অ্যাজ কেয়ার’।

সংস্থাটির ম্যানেজার মিরাজ হোসেন জানান, ৫ বছরে একবারের জন্যও অসুস্থ সেলিমের খোঁজ নেননি তার পরিবারের কেউ। ২০১৭ সাল থেকে তিনি এই বৃদ্ধাশ্রমেই আছেন। তার মেয়ে বা আত্মীয়-স্বজন কেউ আসেনি। বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে বৃদ্ধ সেলিমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমে পরিবারের সদস্য সম্পর্কে কিছুই জানাননি। পরিবারের সদস্যদের সম্মানে লাগতে পারে ভেবে নিজের পরিচয় দেওয়ার সময় বারবার বলছিলেন, ‘আমার কেউ নেই।’ এরপর ধীরে ধীরে তিনি কথা বলতে শুরু করেন। বৃদ্ধ সেলিম বলেন, তার দুই মেয়ে এখন চাকরি করেন। মেয়ের সন্তান রয়েছে। তাদের সুখের সংসারে বোঝা বাড়াতে চান না আত্মসম্মানের সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করা এই শিক্ষক।

বৃদ্ধাশ্রমে কীভাবে এলেন, জানতে চাইলে মোহাম্মদ সেলিম বলেন,  এখানে মালিকে এনেছে। আমি এখানে ভালো আছি। আমার দুই মেয়ে রয়েছে। এখন বাড়ি যেতে, মেয়েদের কাছে যেতে আর ইচ্ছে করে না। আমার দুই মেয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে চাকরি করে। মেয়ের জামাইরা চট্টগ্রাম বন্দরে কাজ করে। মেয়েদের কাছে যেতে তার ভালো লাগে না। ২০১৭ সালে বৃদ্ধাশ্রমে আসার পর থেকে গত ৫ বছরে একবারও মেয়েরা দেখতে আসেনি। তারা কলও করে না। তাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমাকে চট্টগ্রাম থেকে এখানে আনা হয়েছে। তারা জানে আমি এখানে আছি, কেউ খোঁজ নেয় না। মেয়ের ছেলেকে দেখার ইচ্ছার কথা জানিয়ে সেলিম বলেন, ‘আট বছর বয়সের নাতিকে দেখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি তো প্যারালাইজড। আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।

ঈদে সন্তানদের নতুন জামা কিনে দেওয়ার স্মৃতি মনে করে এই অসহায় বাবা বলেন, আমার টাকা-পয়সার অভাব ছিল না। একসময় ঈদে মেয়েদের নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতাম, আনন্দ করতাম। আজ সেগুলো মনে পড়ে। কিছুই করার নেই। আমার ভাগ্য খারাপ। মেয়েদের চাকরি দিয়েছেন জানিয়ে বৃদ্ধ বাবা বলেন,  সন্তানদের লেখাপড়া করালাম, চাকরি দিলাম। তারা সবাই চাকরি করে। আমার বড় ভাইও চাকরি করত। আমরা সবাই সরকারি চাকরি করতাম। আমি ১৯৮০ সালে চাকরি শুরু করেছিলাম। অবসরে গেছি ২০১২ সালে।

চিকিৎসার কথা বলে মেয়েরা সব টাকা নিয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ সেলিম বলেন,  চিকিৎসার কথা বলে আমার পেনশনের ২৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুই মেয়ে। একজনের বিয়ে দিয়েছি আমি চাকরি করাকালীন। আরেক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি ২০১৩ সালে, আমার অবসরের পরে। আমার অবসরের সময় আমি এক মেয়েকে চাকরি দিয়েছিলাম।

পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পর্কে মোহাম্মদ  সেলিম বলেন,  আমার জমি রয়েছে, সেগুলোও মেয়েদের। আমার বড় ভাই জমির দেখাশোনা করত। সেও মারা গেছে। ভাইয়ের ছেলে দক্ষিণ আফ্রিকা থাকে। তার আর দেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। সেখানেই সে বিয়ে করে ভালো আছে।

কথা জানিয়ে সেলিম বলেন, ‘আট বছর বয়সের নাতিকে দেখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি তো প্যারালাইজড। আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।

ঈদে সন্তানদের নতুন জামা কিনে দেওয়ার স্মৃতি মনে করে এই অসহায় বাবা বলেন, আমার টাকা-পয়সার অভাব ছিল না। একসময় ঈদে মেয়েদের নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতাম, আনন্দ করতাম। আজ সেগুলো মনে পড়ে। কিছুই করার নেই। আমার ভাগ্য খারাপ। মেয়েদের চাকরি দিয়েছেন জানিয়ে বৃদ্ধ বাবা বলেন,  সন্তানদের লেখাপড়া করালাম, চাকরি দিলাম। তারা সবাই চাকরি করে। আমার বড় ভাইও চাকরি করত। আমরা সবাই সরকারি চাকরি করতাম। আমি ১৯৮০ সালে চাকরি শুরু করেছিলাম। অবসরে গেছি ২০১২ সালে।

চিকিৎসার কথা বলে মেয়েরা সব টাকা নিয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ সেলিম বলেন,  চিকিৎসার কথা বলে আমার পেনশনের ২৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুই মেয়ে। একজনের বিয়ে দিয়েছি আমি চাকরি করাকালীন। আরেক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি ২০১৩ সালে, আমার অবসরের পরে। আমার অবসরের সময় আমি এক মেয়েকে চাকরি দিয়েছিলাম।

পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পর্কে মোহাম্মদ  সেলিম বলেন,  আমার জমি রয়েছে, সেগুলোও মেয়েদের। আমার বড় ভাই জমির দেখাশোনা করত। সেও মারা গেছে। ভাইয়ের ছেলে দক্ষিণ আফ্রিকা থাকে। তার আর দেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। সেখানেই সে বিয়ে করে ভালো আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

Recent Comments