দখিনের সময় ডেস্ক:
খেজুর রসের মাটির ঘটিতেই যেন আসে শীতের আগমনী বার্তা। শীত এখনো না নামলেও শুরু হয়ে গেছে খেজুর গাছ পরিচর্যার কাজ। গাছিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এ কাজে। আগামী ৪ মাস চলবে রস সংগ্রহের কর্মযজ্ঞ। শীতে গ্রামবাংলার জনজীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুরের রস।
‘মধুবৃক্ষ’ খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহ হবে সুমিষ্ট, স্বাস্থ্যসম্মত এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ রস। তাতে তৈরি হবে নলেন গুড় ও পাটালী। এই জেলা থেকে যে রস উৎপাদন হয় তার ৩০ ভাগ রস খাওয়া হয় আর বাকি ৭০ ভাগ রস দিয়ে গুড় তৈরি করা হয়।
জানা গেছে, এ বছর ১৫ হাজার ৭শ ৫২ জন খেজুর গাছি ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় গাছ কাটা শুরু করেছেন। জেলায় এ বছর ১ লাখ ১৩ হাজার ৪শ ১৫টির বেশি খেজুর গাছ থেকে ৫৭ লাখ ৮৭ হাজার ৮শ ২৫ লিটার রস এবং ৫শ ৮০ দশমিক ৪৫ মেট্রিক টনের বেশি গুড় পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সদর উপজেলায় খেজুর গাছ আছে ৪৭ হাজার ৩শ ৮০টি। কালীগঞ্জ উপজেলায় ১১ হাজার, কোটচাঁদপুরে ২০ হাজার ২২৫, মহেশপুরে ১০ হাজার ৮শ ৯০, শৈলকুপায় ১৪ হাজার ৩শ ৪৫ এবং হরিণাকুন্ডুতে ৯ হাজার ৫শ ৫০টি খেজুর গাছ রয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের আবু তালেব প্রতি বছর খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন। এক সপ্তাহ ধরে সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি তালেব ছুটে চলেছেন এক গাছ থেকে অন্য গাছে। গ্রামের একমাত্র গাছি তিনি। বয়সের ভারে গাছে উঠতে কষ্ট হলেও রস ও গুড় বিক্রি করে সামনের ৬ মাস চলার আশায় অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন তিনি। আবু তালেব জানান, ১০ হাড়ি রস থেকে এক হাড়ি গুড় হয়। একটি গাছ থেকে এক সিজনে ১২০-১৪০ ঠিলে রস পাওয়া যায়। শীতের ভোরে যেমন রসের কদর আছে, তেমনি আছে গুড়ের কদর। এক হাড়ি রস ১২০ টাকা করে বিক্রি হয়। অন্যদিকে এক কেজি নলেন গুড়ের দাম ১৮০-২০০ টাকা। এখন এক ঠিলে গুড় বিক্রি হয় হাজার-১২শ টাকায়।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, জেলায় এবার রস উৎপাদানের টার্গেট রয়েছে ৫৭ লাখ ৮৭ হাজার ৮শ লিটার । আর গুড় উৎপাদনের টার্গেট ৫৮১ মেট্রিক টন।