স্টাফ রিপোর্টার:
বরিশালে ডায়রিয়া ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এ বিভাগের ছয় জেলায় উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে ডায়রিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ৬৩ জন আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়েরিয়ার মৃত্যুও হচ্ছে। সামাজিক অনুষ্ঠান বৃদ্ধি, করোনার প্রকোপ এবং উপকূলীয় এলাকায় লবনাক্ত পানির উপস্থিতির কারনে ডায়রিয়া আক্রান্তের হার বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর সঙ্গে রয়েছে ইফতারে ভাজাপোড়া খাবার প্রবনতা।
ডায়রিয়া আক্রান্তের সু-নির্দিস্ট কারণ অনুসন্ধানে বরিশালের রোগীদের নমূনা সংগ্রহ করছে আইইডিসিআর। মার্চ ও এপ্রিল মাসে সাধারনত ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। কিন্তু এবারের এপ্রিলে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা আগের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। গত মার্চে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৫১ জন ডায়রিয়া রোগী। সেখানে চলতি মাসে এ পর্যন্ত জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৯২ জন রোগী।
বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের ছয় জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ৫১২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সাড়ে চার মাসের বেশি সময়ে (জানুয়ারি থেকে ২১ এপ্রিল) আক্রান্ত হন মোট ৩২ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোলায় ৮ হাজার ৯০ জন। এ ছাড়া পটুয়াখালীতে ৭ হাজার ৩৪১, বরগুনায় ৪ হাজার ৮৪৯, বরিশালে ৪ হাজার ৩৬৯, পিরোজপুরে ৪ হাজার ২ ও সর্বনিম্ন ঝালকাঠিতে ৩ হাজার ৫৩২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ বিভাগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় চারজন এবং বরগুনা ও পটুয়াখালীতে দুজন করে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন দ্বীপ ও উপকূল অঞ্চলের বাসিন্দারা। গত সাত দিনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ২০ জন, যা গড়ে দৈনিক ১ হাজার ১৪৫। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৬শ’ ৭২জন রোগী। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ভর্তি হয়েছেন ৮ হাজার ২০জন এবং সব শেষ গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৫শ’ ১২জন রোগী। গত ২৪ ঘন্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পটুয়াখালীতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর বরিশাল জেলায় ৪জন, বরগুনায় ২জন এবং পটুয়াখালীতে ২জনের মৃত্যু হয়েছে ডায়রিয়ায়। গত পহেলা জানুয়ারী থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩২ হাজার ১৮৩জন রোগী।