দখিনের সময় ডেস্ক:
বরিশালে মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহাম্মেদ মান্নাকে গুলী করার চেষ্টা করেছেন জাতীয় পার্টির আহবায়ক একেএম মুর্তজা আবেদী আবেদিন। এ সময় স্থানীয় জনতা পিস্তলসহ জাতীয় পার্টির নেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এসময় ঘটনাস্থলে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য দুই পক্ষের মধ্য থেকে রিবলভারটি নিজের হেফাজতে নিয়েছেন।
এ ঘটনায় ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুর্তজা আবেদীনকে হেফাজতে নেয় কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। রবিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর লঞ্চঘাট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। মুর্তজা আবেদীনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ শ্রমিকলীগ নেতা রইজ আহমেদ মান্নার। তার অভিযোগ কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে মুর্তজা আবেদীন গুলি চালানোর চেষ্টা করলে প্রতিহত করেছেন তারা। মুর্তজা আবেদীন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল জেলা কমিটির আহ্বায়ক। এছাড়া শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্না মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা এবং মোবাইল ফোনে ধারনকৃত ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাউন্সিলর মুর্তজা আবেদীন বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত কাজে লঞ্চঘাট এলাকায় বরিশাল সদর ভূমি অফিসে যাই। এ সময় ভবনের ওপর থেকে দেখতে পাই বরিশাল মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদে মান্না, তার ভাই নাদিম ও মিঠুসহ তাদের ৩০-৪০ জন অনুসারী ভূমি অফিসের সামনে জরো হচ্ছে। আমি তাদের দেখে আমার মোবাইল ফোনের ভিডিও চালু করে ভূমি অফিস থেকে বের হই। বাইরে বের হতেই ‘শালা আমার বৌয়ের গায়ে তুই হাত দিছো’ বলে মান্না ও তার অনুসারীরা আমার ওপর হামলা চালায় এবং আমার কোমড়ে থাকা লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে চায়। পরে ট্র্যাফিক পুলিশ এসে আমার আগ্নেয়াস্ত্রটি হেফাজতে নেয়। মুর্তজা আবেদীন বলেন, আমি ২ নম্বর ওয়ার্ডে টানা ২৭ বছরের কাউন্সিলর। আমি জনপ্রিয় হওয়াই আমার অপরাধ। ইতিপূর্বে সিটি নির্বাচনের আগে মান্না কারাগারে থাকাবস্থায় তার নির্দেশে আমার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মামলা করবেন বলে জানান মুর্তজা আবেদীন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রইজ আহমেদ মান্না বলেন, ‘আমাদের জমা-জমির বিষয়ে একটি ঝামেলা ছিল। সেই কাজের জন্য আমি ভূমি অফিসে যাই। কাজ শেষ করে যখন বের হই তখন পাশ থেকে এসে মুর্তজা আবেদীন পিস্তল বের করে আমাকে গুলি করার চেষ্টা করে। এ সময় আমার সঙ্গে আরও ৩-৪ জন ছিল। তারা পুরো বিষয়টি দেখেছে। তারা এবং স্থানীয়রা মুর্তজাকে গুলি করতে বাধা দেয়।
পরে স্থানীয় ট্র্যাফিক পুলিশ এসে ওই পিস্তলটি নিয়ে যায় এবং মডেল থানায় ফোন করা হলে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।’ এ বিষয়ে কোনো মামলা করেছেন কিনা? উত্তরে তিনি বলেন, আমি যেহেতু একটি সংগঠন করি। তাই সিনিয়রদের বিষয়টি জানিয়েছি। অবশ্যই আমি চাই তার শাস্তি হোক। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম বলেন, ‘ভূমি অফিস থেকে বের হওয়ার পর মুর্তজা ও মান্নার সাথে দেখা হয়ে যায়। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায় মুর্তজা আবেদীন পিস্তল বের করে। তিনি বৈধ পিস্তলের অবৈধ ব্যবহার করছেন কী-না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আপাতত তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন।
রইজ আহমেদ মান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরা এবং অন্যান্য মোবাইল ফোনের ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এতে যেই দোষী হবে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিবো। কোন নির্দোষ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে দিকটাতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।
ঘটনার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুণ https://www.facebook.com/dokhinersomoy/videos/841558464003110