পুলিশ সদস্যদের মারধরের অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী আটক

দখিনের সময় ডেস্ক:

মোটরসাইকেল আটক করাকে কেন্দ্র করে দুই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ১৫-২০ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালকসহ তিন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। আটক শিক্ষার্থীরা হলেন- হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনভির ইসলাম ও রমজান হোসেন সোহাগ।

মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বরিশাল নগরীর  বান্দ রোডে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের সড়কে হামলার ঘটনা ঘটে। এদিন রাত সাড়ে ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

অভিযোগ উঠেছে,  রাত ৮টার দিকে একটি বাইকে করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্বরত সার্জেন্ট মনিরুল হাসান তাদের থামিয়ে কাগজ দেখাতে বলেন। কিন্তু কোনো কাগজ না থাকায় গাড়িটির বিরুদ্ধে মামলা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের বন্ধুদের মুঠোফোনে ডেকে আনেন এবং সংঘবদ্ধভাবে দায়িত্বরত সার্জেন্ট মনিরুল হাসান ও কনস্টেবল মোস্তফার ওপর হামলা চালান। হামলার সময় পুলিশের ওয়ারলেস ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর, বডিঅন ক্যামেরা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। আহতরা শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

তবে এঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার  অভিযোগ এনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়কে রাত ৯ টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় তারা পুলিশ হেফাজতে থাকা শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ওই তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশ মারধর করেছে। আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘মামলা করার পরেও পুলিশ মারধর করেছে। এটা আইন হতে পারে না। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছি।’ 

ঘটনাস্থলে বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুলসহ তার দল উপস্থিত হয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের একটি ঘটনাকে সূত্র ধরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক আটকে দেওয়াটা সঠিক কাজ হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে আশ্বস্ত করেছি। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাব। শিক্ষার্থীরা আমার আশ্বাসে মহাসড়ক থেকে সরে গেছেন। আমি এখন কোতোয়ালী মডেল থানায় যাচ্ছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিশাল ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আটক গাড়ির কোন কাগজপত্র ছিলো না। এছাড়া চালকের মাথায় হেলমেট ও লাইসেন্স ছিলোনা। তাই নিয়ম অনুযায়ী মোটর সাইকেল আটক করা হয়েছে। হামলায় সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা গুরুতর আহত হয়েছে। এসময় পুলিশের বডি অন ক্যামেরা ও ওয়ারলেস সেট নিয়ে গেছে।

কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন রাত সাড়ে ১১টায় জানান, এই ঘটনায় তিন ছাত্রকে পুলিশ নিজ হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।