দখিনের সময় ডেক্স:
মহামারী করোনার সংক্রমণ নিয়ে গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন। অনেকেই সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছে যেতে চান না। আবার করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে যারা যাচ্ছেন তাদের মধ্যে বহু আত্মীয়-স্বজন, চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে রোবট উদ্ভাবন করেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের ভদ্রপাড়া গ্রামের দেলোয়ার সরদারের পুত্র সরকারী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শাওন সরদার সোলাইমান। তার উদ্ভাবিত রোবট করোনা রোগীর বেডের পাশে গিয়ে তার চিকিৎসায় প্রাথমিক পরামর্শ দিতে পারবে।
করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ সবাই। চলমান পরিস্থিতিতে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কাছে যেতে দ্বিধাবোধ করছেন সংক্রমিত হওয়ার আতঙ্কে। এমন সব পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসকের সহায়ক হিসেবে ‘মেডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট’ নামে ‘রোবট’ উদ্ভাবন করেছেন স্কুলছাত্র শাওন সরদার সোলাইমান।
দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শাওন সরদার সোলাইমান জানান, ২০২০ সালের মার্চ মাসে যখন করোনা সংক্রমণ শুরু হয়, তখন সে বিভিন্ন হৃদয়বিদারক দৃশ্য ও ঘটনা জানতে পারে। যেমন আক্রান্ত হলে মায়ের কাছে সন্তান যাচ্ছেনা, বাবা-মাকে ফেলে রেখে যাচ্ছে সন্তানরা ইত্যাদি। তখনই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবার জন্য একটি ‘রোবট’ তৈরি করবে। এরপর অনলাইনে ‘রোবট’ উদ্ভাবনের ভিডিও দেখে সে মেডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্টের সিস্টেম ডেভেলপ করতে শুরু করে।
করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছে না গিয়ে ঔষধ সরবরাহ ও তথ্য সংগ্রহের কাজে রোবটটি তৈরি করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে যন্ত্রটি বড় ভূমিকা রাখবে। রোবটটি চিকিৎসক ও নার্সদের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। চিকিৎসক তার কক্ষে বা অন্য কোথাও বসে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রোবট নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
এছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে না গিয়েও তাকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন ঔষধ, খাদ্য সরবরাহ করা যাবে। এর সেন্সরের সামনে রোগীর মাথা রাখলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী মনিটরে দেখা যাবে।
এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাশেম বলেন, উপজেলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এটি আনন্দের সংবাদ। আমরাও তাদের সহায়তা করতে চাই। এই সব ক্ষুদে প্রযুক্তিবিদরা এক সময়ে বড় বিজ্ঞানী হবে বলে আমার বিশ্বাস। যারা রোবট নিয়ে কাজ করছে তারা সহায়তার আবেদন করলে আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সহায়তার চেষ্টা করব।