Home বরিশাল মৎস্যজীবী লীগ সভাপতির দাপট,  ১৩ বছর ধরে বন্ধ বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র

মৎস্যজীবী লীগ সভাপতির দাপট,  ১৩ বছর ধরে বন্ধ বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র

দখিনের সময় ডেস্ক:
সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্র (বিএফডিসি)। কিন্তু মৎস্য আড়ত মালিক ও শ্রমিকদের কাছে জিম্মি অবস্থায় পরিত্যক্ত হয়ে আছে ১৩ বছর ধরে। ধারণা করা হচ্ছে এই সময়ে কমপক্ষে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার।
পরিত্যক্ত বিএফডিসি এলাকায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা দামের অবকাঠামো, বরফ তৈরির কারখানা, পানি সংরক্ষণাগার, আড়ত ঘর। এ ছাড়া দখল হয়ে গেছে মাছ পরিবহনের জেটি। রাজস্ব দেখাতে বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ টাইলস কোম্পানিকে ভাড়া দিয়েছেন ভবন।  কীর্তনখোলা নদীর তীরে বরিশাল নগরীর বান্দরোড সংলগ্ন এক একর ২৩ শতাংশ জমির ওপর ১৯৮৬ সালে নির্মাণ করা হয় বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্র। এতে রয়েছে দুটি বরফ কল, মৎস্য বিপণনের বিশালাকার দুটি শেড, একটি ওয়াচ টাওয়ার, একটি জেটি, ১০ হাজার গ্যালন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পানি সংরক্ষণাগার, আড়ৎদারদের জন্য ৩২ রুমের দোতলা ভবন ও একটি গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা।
নির্মাণের পর ২০০৭ সালে প্রথম চালু করা হয়। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশাসন মৎস্য আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি এই প্রতিষ্ঠান চালুর উদ্যোগ নেন। বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০০৭ সালে চালু হয়ে ব্যবসায়ীদের অনীহার কারণে ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়  বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্র। এই তিন বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা আয় করে প্রতিষ্ঠানটি। নদীর যে স্থানে বিএফডিসি স্থাপন করা হয়েছে সেখানে সহজেই মাছভর্তি শতশত নৌযান নোঙর করতে পারতো। বরফকল, মৎস্য অবতরণ শেড, জলাধার, পার্কিং প্লেস থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই ব্যবসা করতে পারতেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বিএফডিসি বন্ধ করে দিয়ে ব্যবসায়ীরা বর্তমানে পোর্ট রোডে যেখানে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চালু রেখেছে সেখানে মৎস্য অবতরণ শেড, নৌযান নোঙরের জায়গা, গাড়ি পার্কিং বা জলাধার নেই। এমনকি পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এলাকায় দিনের পুরো সময়ই প্রচণ্ড যানজট লেগে থাকে। মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, বিএফডিসিতে ব্যবসা করলে সরকারের নিয়ম মেনে করতে হয়। তাতে সাধারণ ব্যবসায়ীদের সুবিধা হলেও ব্যবসায়ী নেতাদের অসুবিধা হয়। এজন্য বিএফডিসি বন্ধ করে দিয়ে রসুলপুর সংলগ্ন পোর্ট রোডে অবতরণ কেন্দ্র নিয়ে আসা হয়। এখানে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করতে পারেন আড়ৎদারেরা। যেকোনো ধরনের মাছ প্যাকেট করে চালান করে দিতে পারে। বাজার নিয়ন্ত্রণেও সরকারের হাত থাকে না।
২০০৯ সালে যার নেতৃত্বে বিএফডিসি ছেড়ে ব্যবসায়ীরা চলে যান তিনি বর্তমানে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি খান মো. হাবিব। তিনি বলেন,  পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি অনেক পুরানো একটি বাজার। কমপক্ষে ৪০ বছরের। যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল আমাদের বাধ্য করা হয় বিএফডিসিতে নিতে। তখন ভয়ে আমরা সেখানে যাই। যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চলে যায় আমরা আমাদের সুবিধাজনক পোর্ট রোড বাজারে চলে আসি। তিনি বলেন, ওখানে আমরা সুবিধামতো ব্যবসা চালাতে পারছিলাম না। তাছাড়া অন্যের অধীনে ব্যবসা করার ইচ্ছে আড়ৎদারদের মধ্যে নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

এই সরকারের ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই: ড. ইউনূসের

দখিনের সময় ডেস্ক: দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এই সরকারের ব্যর্থ...

৬টি পদে সরকারি চাকরি, এসএসসি পাসেই আবেদন

দখিনের সময় ডেস্ক: কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ছয়টি শূন্য পদে ১১ থেকে ২০ তম গ্রেডে ৮৫ জনকে নিয়োগের জন্য এ...

নতুন ফোন কিনছেন, জেনে নিন এ বিষয়গুলো

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই আজকাল নতুন ফোন কেনার সময় পুরোনো ফোনটি বিক্রি করে দেন বা ফোনটি বদলে নেন। পুরোনো ফোন বদলে নতুন ফোন কেনার সময়...

খেজুর ভেজানো পানি খেলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: খেজুর সবচেয়ে জনপ্রিয় শুকনো ফলের মধ্যে অন্যতম। এর স্টিকি টেক্সচার এবং প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি স্বাদ সবাই পছন্দ করেন। সেইসঙ্গে এটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং...

Recent Comments