Home শীর্ষ খবর গুঠিয়া মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

গুঠিয়া মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

দখিনের সময় ডেস্ক:
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের চাংগুরিয়া গ্রামের বায়তুল আমান জামে মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। গুঠিয়া ইউনিয়নে স্থাপিত বিধায় এটি গুঠিয়া মসজিদ নামে সমাধিক পরিচিত। বরিশাল থেকে এর দূরত্ব ২১ কিলোমিটার।  ভৌগলিক দিক দিয়ে চন্দ্রদ্বীপ, বাকলা পরবর্তীতে বরিশালে পরিণত হওয়া ৫০ হাজার বছর বয়সী এই জনপদের নবপরিচয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মাত্র ১৭ বছর বয়সী অনিন্দ্য সুন্দর এই স্থাপনা। প্রতি বছর হাজার হাজার ভ্রমণপিপাসু দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বরিশালে ছুটে আসেন এই স্থাপনার গোধূলী আর সন্ধ্যা পরবর্তী সৌন্দর্য উপভোগে।
চাংগুরিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী এস সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু ব্যক্তি উদ্যোগে ২০০৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করেন। প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ একর জমির ওপরে মসজিদ ও ঈদগাহ কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হয় ২০০৬ সালে। মসজিদ এলাকায় রয়েছে ছোট-বড় প্রায় ১৩টি গম্বুজ। মসজিদের মূল মিনারের উচ্চতা ১৯৩ ফুট। বিবেচনা করা হয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ মিনার এটি। বায়তুল আমান জামে মসজিদের মূল ভবনে এক জামাতে প্রায় দেড় হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। আর ঈদগাহ ময়দানে ২০ হাজারেরও বেশি।
প্রধান ফটক থেকে মসজিদের ভেতর সবখানেই সুদৃশ্য ক্যালিওগ্রাফি, বর্ণিল কাচ, দামি মার্বেল ও গ্রানাইট পাথরে মোঘল আর আধুনিক স্থাপত্যকলার সমন্বয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ইসলামিক নির্মাণশৈলী। মসজিদের মূল কাঠামোতে ৯টি গম্বুজ। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় গম্বুজের ভেতরের চারদিকে বৃত্তাকারে ক্যালিওগ্রাফিতে লেখা হয়েছে সুরা আর রহমান। অন্য ৮টি মিনারের নিচে মদিনা থেকে নিয়ে আসা ঝাড়বাতি বসানো হয়েছে। মসজিদের সামনে নীল ও ফিরোজা রঙের টাইলসে নির্মিত দুটি ফোয়ারা নান্দনিকতার অপূর্ব চিত্রায়ন। মসজিদে প্রবেশের দোয়া অঙ্কিত প্রধান খিলান, সুদৃশ্য কারুকাজ খচিত কাঠের ছয়টি দরজা, মূল্যবান ঝাড়বাতি, সিরামিকস, গ্লাস, মার্বেল ও গ্রানাইট পাথরে সজ্জিত ভেতরকার আবহ বিমোহিত করবে যে কাউকে।
মসজিদের চিত্তাকর্ষক সৌন্দর্য ফুটে ওঠে পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের সোনালি আলোয় আর সন্ধ্যার পরে পুরো কমপ্লেক্সজুড়ে বৈদ্যুতিক আলোকচ্ছটায়। কখনো লোহিত, কখনো গোলাপি, সাদা আর হলুদ রঙের মসজিদ যেন আলোর সঙ্গে সঙ্গে রঙ বদলায় প্রতি মুহূর্তে। পুরো মসজিদের সৌন্দর্য এক কথায় অপূর্ব। মসজিদ ভবনের পূর্বে বিশাল দিঘি, শান বাঁধানো প্রশস্ত ঘাট, কম্পাউন্ডের চারদিকে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল-ফলদ বৃক্ষশোভায় হৃদয় জুড়িয়ে যায় দর্শনার্থীদের। এখানে নারী ও পুরুষের জন্য রয়েছে আলাদা নামাজের স্থান। রয়েছে কবরস্থান। যেখানে সম্বলহীনদের মরদেহ বিনামূল্যে দাফন করা হয়। এছাড়াও এতিমখানা, ডাকবাংলো, গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, লেক ও হ্যালিপ্যাড বাড়তি সুবিধা যুক্ত করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

সুযোগ পেলে গলা চেপে ধরবে আ.লীগ: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: গণহত্যার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও, সুযোগ পেলে আবারও তারা মানুষের গলা চেপে ধরবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র...

পরীমণির প্রথম স্বামীর রহস্যজনক মৃত্যু, খুন না সড়ক দুর্ঘটনা?

দখিনের সময় ডেস্ক: সড়কে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে পরীমণির প্রথম স্বামী ইসমাইল হোসেনের । প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, একি দুর্ঘটনা না কি খুন? প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, শুক্রবার...

এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-আমেরিকান কিশোর হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল

দখিনের সময় ডেস্ক: এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমেরিকান-ইহুদি কিশোর (১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী) 'আমি হামাসের সাথে সহানুভূতিসম্পন্ন'- এমন বক্তব্যের সাথে একমত। ইসরাইলের একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে...

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

Recent Comments