দুর্নীতি প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী হয়তো কঠোর অবস্থানে যাবেন
দখিনের সময়
প্রকাশিত জুলাই ১০, ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ
সংবাদটি শেয়ার করুন...
একটি কথা বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, অযোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা তুলনামূলক বিচারে অধিক থাকে। আর এরা তৈলমর্দন কর্মে বেশ পটু। তবু আশার কথা হচ্ছে, দুর্নীতি প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী হয়তো কঠোর অবস্থানে যাবেন। এদিকে কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগেছে দুদক। যদিও এই দুদকের কাছ থেকেই ২০০৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দুর্নীতির শিরোমণি মতিউর রহমান ‘তুলসী পাতা’ সনদ পেয়েছেন। এদিকে রাষ্ট্রীয় শুদ্ধাচার পুরস্কারপ্রাপ্ত বেনজীর আহমেদ পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার আগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার বক্তা ছিলেন। কেবল বেনজীর নন, সবার মুখেই দুর্নীতিবিরোধী খই ফোটে অথবা পপকর্ন। সবাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কে না বলে? ধর্ম, নীতি কথা, রাজনীতি থেকে শুরু করে সবখানে দুর্নীতিবিরোধী কথামালা। সক্ষম-অক্ষম সবাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলে। সঙ্গে এ অপকর্মটি সমানে চলে। কোথায় না আছে দুর্নীতি! দুর্নীতির আগ্রাসনে মানুষ যখন হতাশার চরমে তখন ২৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্নীতি করলে কারও রক্ষা নেই, যারাই দুর্নীতি করবে আমরা ধরব।’ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের দুই দিন পর ১ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুর্নীতি প্রসঙ্গে সম্ভবত কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। আলামত তাই বলে। যার কিছুটা প্রতিফলন ঘটেছে ওই দিনের সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের বক্তব্য ও উচ্চারণের দৃঢ়তায়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, ‘দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখানো হবে না! দুর্নীতি করে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। যারা দুর্নীতি করছে, সরকারের নজরে এলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পর সরকার কাউকে ছেড়ে দিয়েছে এমন নজির নেই।’ চলমান ঘটনা প্রবাহের আলোকে ৪ জুলাই সচিব সভাকেও বিশেষ গুরুত্ববহ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এ সভায় আসলে দুর্নীতির বিষয়ে সচিবদের প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা কনভে করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়টি এক দিন আগে প্রকারান্তরে বাজারে ছেড়েছেন সরকারের মুখপাত্র সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘একটা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-সচিব যদি সৎ হন তাহলে ওই মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি থাকতে পারে না।’ এ প্রসঙ্গে তিনি রাজনীতিকদেরও টেনেছেন।
এরপরও প্রশ্ন উঠতেই পারে, বক্তব্য আর তোড়জোড়ে কী আসে যায়? এ আর নতুন কী! এ ধরনের কথা তো হরহামেশাই বলা হয়, হয়েছে। এমনকি টানা চারবারের ক্ষমতায় আরোহণের নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগ তো দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোর দিয়েই বলেছে। যেমন ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে বলা হয়েছে- ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা।’ ২০১৪ সালে বলা হয়েছে- ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ।’ ২০১৮ সালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হয়েছে- ‘জিরো টলারেন্স’ এবং এই সেদিন চলতি ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনি ইশতেহারে ছিল- ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ অব্যাহত’ রাখার ঘোষণা।
# বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত, ৮ জুলাই ২০২৪। শিরোনাম ‘দুর্নীতিবাজরা যেন ছাড় না পায়’