আলম রায়হান:
বরিশাল নগর পরিবহনে চরম অরাজগতা চলছে। এক কথায় চলছে ত্রি-হুইলারের স্বেচ্ছাচারিতা। হোক তা রিকসা অথবা অন্য ত্রি-হুইলার। মটার চালিত রিকসা চলে বেপরোয়া গতিতে। যে কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। আর রিকসাসহ অন্য ত্রি-হুলাইর চলে কোন রকম নিয়ম-নীতি না মেনেই। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের পাশাপাশি ভিতরে-উপরের বহন করা হয় বিপদজনকভাবে মালামাল। নগরবাসীর প্রশ্ন, এ দেখার কী কেউ নেই?
বরিশাল শহরে মটার চালিত রিকসার তান্ডব চলছে বহু আগে থেকে। এ তান্ডবের ত্রাণকর্তা হিসেবে সামনে ছিলেন জনপ্রিয় রাজনীতিক ডা. মনিষা চক্রবর্তী। বিভিন্ন সূত্র বলছে, এ নেপথ্যে তার উদ্দেশ্য ছিলো রাজনীতিতে একটি ম্যাসেল গ্রুপ তৈরী করা। ডা. মনিষার ছত্রছায়ায় থেকে শুরু থেকে এরা সড়কের কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করতো না। এরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে মটার চালিত রিকসা চলাচলের উপর কাগুজে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেবার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক নির্দেশের পর। সারাদেশের মতোই এখন বরিশাল নগরীর সড়ক মহাবিপদের স্থান হয়ে দাড়িয়েছে। যে ধারায় যুক্ত হয়েছে অন্যান্য থ্রি-হুইলারও।
বরিশাল নগরীতে রিকসা ছাড়াও অন্য তিন ধরনের থ্রি-হুইলার চলে। যথাযথ বৈধতা না থাকলেও এগুলোর চলাচলের উপর আগে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছিলো। বিশেষ করে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের ক্ষেত্রে বেশ কড়াকড়ি ছিলো। এমন কি ডান দিক থেকে ওঠা-নামা বন্ধের পাকা ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। কিন্তু সেই ব্যবস্থা হাওয়া হয়েগেছে। এখন ডানে-বামে, সবদিক থেকে ত্রি-হুইলারে ওঠা-নামা যায়। আর এগুলো যাত্রী তোলার কাজ করে রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিএমপির ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, মামলা দিতে দিতে আমরা ক্লান্ত হয়েগেছি। ডাম্পিং-এর যায়গা নেই। নগরীতে ত্রি-গুলাইরে তান্ডবের জন্য পুলিশ এই কর্মকতা প্রকারন্তরে দায় চাপিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের উপর। এদিকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের এক দায়িত্বশীল কর্মকতা জানিয়েছেন, কোন ত্রি-হুলারকেই লাইসেন্স দেয়া হয়নি। কেবল চলাচলের অনুমতি দেয়া হয় মাত্র ২৬১০ টি হুলুদ ত্রি-হুইলারকে। তিনি জানান, চলাচলের অনুমতি দেয় ২৬১০ টি হুলুদ ত্রি-হুইলারের নবায়ন শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গ ক্রমে তিনি বলে, সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র থাকাকালে অন্তত ৫ হাজার ত্রি-হুইলারকে চলাচলের অনুমিত দিয়েছিলেন। এগুলোর হিসেব বিসিসির খাতায় নেই বলে জানিয়েছেন উল্লেখিত কর্মকর্তা।
এদিকে অপর একটি সূত্র বলছে, বরিশাল নগরী থেকে ছেড়ে যাওয়া ও অভ্যন্তর দিয়ে চলাচলকারী বড় গণ-পরিবহন মাফিয়া চক্রের হাতে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অধিকতর জিম্মী হয়ে পড়েছে। এমনকি এগুলো সড়কে পার্ক করে রাখা হয়। আর বাসটার্মিনাল থেকে বের হয়ে অনেকক্ষণ ধরে রাস্তায় দাড় করিয়ে যাত্রী তোলা হয়। এ ক্ষেত্রে নতুল্লাহবাদের অবস্থা ভয়াবহ।