Home অন্যান্য নির্বাচিত খবর প্রথম স্বামীকে খুন করে পাঁচ বছর জেল খেটেছে মুন, মায়ের বিরুদ্ধে দেহ...

প্রথম স্বামীকে খুন করে পাঁচ বছর জেল খেটেছে মুন, মায়ের বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসার অভিযোগ

দখিনের সময় ডেস্ক:

মা-বাবা-বোনকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করার পর স্বামী ও সন্তানকেও হত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছেন মেহজাবিন ইসলাম মুন (২৪) নামে এক তরুণী। হত্যায় অভিযুক্ত মেহজাবিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে মুন পুরিশকে আদ্যোপান্ত জানিয়েছেন। ফোন পাওয়ার পরপরই পুলিশ হাজির না হলে দ্বিতীয় স্বামী শফিকুল ইসলাম ও মেয়ে তৃপ্তিয়াকেও মেরে ফেলতেন মেহজাবিন।

মেহজাবিন ইসলাম মুনের প্রথম বিয়ে হয় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। ওই স্বামীকেও খুন করেছিল মেহজাবিন। সেই মামলায় মেহজাবিনসহ তার বাবা-মা ও বোনের জেল হয়। পাঁচ বছর জেল খেটে তারা জামিনে ছাড়া পায়েছেন। এবার মুন আবার তিন জনকে খুন করলেন।

পরিবারের সবার প্রতি সর্বনাশা ক্ষোভ থেকে গত শুক্রবার গভীর রাতে এ হত্যাকাণ্ডের পর সকালে জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইনে ফোন করে ওই তরুণী বলেন- ‘তিনজনকে খুন করেছি, তাড়াতাড়ি আসেন, তা না হলে আরও দুজনকে (স্বামী-সন্তান) খুন করব।’রাজধানীর কদমতলীতে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ সেবনের মাধ্যমে অচেতন করে। এরপর খুন করে।

নিহত মাসুদ রানা প্রবাসে ছিলেন। তিন মাস আগে ওমান থেকে ফিরে কদমতলীর মুরাদপুর এলাকার ওই বাসায় স্ত্রী, দুই মেয়ে ও বড় মেয়ের জামাইকে নিয়ে বসবাস করতেন মাসুদ রানা। মেহজাবিন জানিয়েছেন, বাবা যখন প্রবাসে ছিলেন, তখন তার মা দুই মেয়েকে দিয়ে দেহব্যবসা করাতেন। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন মেহজাবিন। কিন্তু কোনো ফল হয়নি। তার বিয়ের পর ছোট বোনকে দিয়ে এ ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। এর মধ্যে তার স্বামী ছোট বোনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ ছাড়া মেহজাবিনের বাবা মাসুদ রানা ওমানে আরেকটি বিয়ে করেছেন। এসব মিলিয়ে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ থেকে পরিবারের সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মেহজাবিন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী বেড়ানোর ছুঁতোয় বাসায় এসে শুক্রবার রাতে কৌশলে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে চায়ের সঙ্গে চেতনানাশকজাতীয় কিছু খাওয়ান মেহজাবিন। এতে সবাই অচেতন হয়ে যায়। এর পর তিনি সবার হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মা-বাবা ও বোনকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে খুন করে স্বামী-সন্তানকেও হত্যা করতে উদ্যত হন। সকাল ৮টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশ দ্রুত না পৌঁছলে স্বামী ও সন্তানকেও মেরে ফেলার হুমকি দেন মেহজাবিন। ঘটনাস্থল থেকে সংকাটাপন্ন অবস্থায় মেহজাবিনের স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহজাবিনের স্বামী শফিকুল জানান, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি কিছুই ধারণা করতে পারছেন না। শফিকুল ইসলাম বলেন, মেহজাবিনের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির কারও সম্পর্ক ভালো ছিল না। প্রায়ই তাদের মধ্যে কলহ চলত। মেহজাবিন বেশ কয়েক মাস ধরে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করত। কাজ থেকে বাসায় ফিরে তাকে পাওয়া যেত না। তালা মারা থাকত বাসা। কারণ জিজ্ঞেস করলে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করত। বৃহস্পতিবারও ঝগড়া করে তার বাবার বাড়ি চলে আসে। যদিও হত্যাকান্ডের পেছনে মেহজাবিনের স্বামী শফিকুলকে দায়ী করছেন নিহতদের পরিবারের স্বজনরা।

নিহত মৌসুমী ইসলামের বড় বোন জাহানারা বলেন, মেহজাবিনের ছোট বোন মোহিনীর সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ জন্য তাদের পরিবারে ঝগড়া হতো। তবে শুক্রবার কী ঘটেছিল, তা আমি জানি না। তবে আমাদের ধারণা, পরকীয়ার কারণেই এ ঘটনা ঘটতে পারে।

এদিকে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি আরও জানান, মেহজাবিনের একার পক্ষে তিনটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গ্রেপ্তার এ তরুণীর কাছ থেকে এ কা- সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। যেহেতু সম্পত্তির বিষয় রয়েছে, তাই মেহজাবিনের স্বামীকেও সন্দেহের বাইরে রাখা যাচ্ছে না। প্রয়োজনে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

গাড়িতে আসার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন রনোভাই

প্রায় দুই দশক আগে এসটিভি ইউএস নামে একটি টেলিভিশন আমেরিকা থেকে সম্প্রচারিত হতো। কিন্তু কার্যক্রম পরিচালিত হতো বাংলাদেশ থেকে। এতে মুখোমুখি নামে একটি টকশো...

মাছ ধরার সময় শ্বাসনালিতে বাইন মাছ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঝুঁকিপূর্ণ দেখে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শ্বাসনালি কেটে বাইন মাছটি বের করা হয়। এরপর রোগী সুস্থ হলে ৭-৮ দিন পর তার শ্বাসনালিতে বসানো...

অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে শিক্ষক পেটানো সেই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

দখিনের সময় ডেস্ক: কলেজে অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে শিক্ষক পেটানো ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। শিক্ষককে পেটানো বহিষ্কৃত এ ছাত্রলীগ নেতা হলেন মো. সাফাতুন নুর...

দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের শত শত বাড়ি, কোনটির দাম তিনশ কোটি টাকারও বেশি

দখিনের সময় ডেস্ক: গত কয়েক বছরে দুবাইয়ের বিলাসবহুল এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশিদের আবাসন সম্পদ কেনার বিষয়টি সেখানকার কমিউনিটিতে অনেকটা ‘ওপেন সিক্রেট’। মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশ...

Recent Comments