Home সারাদেশ গরু-ছাগলের জন্য ৩১ লাখ টাকার সেতু

গরু-ছাগলের জন্য ৩১ লাখ টাকার সেতু

দখিনের সময় ডেস্ক : 

ময়মনসিংহ নগরীর শিকারীকান্দা এলাকায় ৬ বছর আগে ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৯ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনে অযত্ন অবহেলায় সেতুটি পড়ে আছে। এরই মধ্যে সেতুর র‌্যালিংয়ের কোন কোন স্থানে পলেস্তারাও খসে পড়ছে। সেতুটি কোন কাজেই লাগেনি মানুষের।

কোন প্রয়োজনে, কেন সেতুটি নির্মাণ করা হলো। এখনও বুঝে উঠতে পারেনি এ এলাকার মানুষ। সড়কের কয়েক গজ পরেই ছোট একটি নালার ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেতুর অপর প্রান্তে আর কোন সড়ক নেই। শুধু ঘাস আর ক্ষেত। সেতুটি গরু-ছাগল চড়ানো ছাড়া অন্য কোন প্রয়োজন পড়ে না।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ নগরীর ঢাকা-ফুলবাড়িয়া বাইপাস সড়কের শিকারিকান্দা এলাকায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সদর উপজেলার বয়ড়া ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ৩৯ ফুট দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ ব্যয় ছিল ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৪৮২ টাকা।

শতাব্দী নামে একটি আবাসন প্রকল্পের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হলেও পরে সেই আবাসন প্রকল্পটি আর হয়নি। সেই আবাসিক প্রকল্পে রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা ছিল। সেতুটির নামফলক থেকে জানা যায়, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের মেসার্স দুর্গা এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদার এই সেতু নির্মাণ করে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্রিজটা বানানো হয়েছিল একটি আবাসিক প্রকল্পের সুবিধার্থে। কিন্তু আবাসিক প্রকল্পটা না হওয়ায় ব্রিজটা আমাদের কাজে লাগে না। কারণ ব্রিজের পরে আর কোন রাস্তা নেই। তবে ঘাস থাকায় অনেকেই সেখানে গরু-ছাগল চড়াতে যায়।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক রেজা আরটিভি নিউজকে জানান, এই সেতু সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। কারণ তার সময়ে সেতুটি তৈরি হয়নি।

সেতুটি নির্মাণ কাজের তদারকিতে ছিলেন তৎকালীন সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মমিনুর রহমান। বর্তমানে তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মুজিব কিল্লা প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্বে আছেন।

তিনি জানান, তিনি সেতুটির প্রস্তাবনা পাঠাননি। শুধু সেতুটির বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিলেন, সেতুটি জনগুরুত্বপূর্ণ না। তারপরও সেতুটি অনুমোদন পায় আবাসন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট লোকজন আর প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও রাজনীতিকদের মাধ্যমে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, মানুষের কাজে লাগে এমন জায়গায় সেতু নির্মাণ করা হয়। যেখানে মানুষের চলাচল থাকবে, পানি নিষ্কাশন বা কৃষকের কাজে লাগবে। সেখানে কেন সেতুটি করা হলো তার বোধগম্য নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

Recent Comments