Home সারাদেশ ভোলার আমন চাষীরা বিপাকে, অনেক জমি অনাবাদি

ভোলার আমন চাষীরা বিপাকে, অনেক জমি অনাবাদি

গাজী তাহের লিটন, বোরহানউদ্দিন ॥

কৃষি বান্ধব সরকার কৃষির উন্নয়নে বছর জুড়ে রেখেছে নানা কর্মসুচি। কৃষিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশের কৃষি বিভাগও মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু, এ বছর অবিরাম বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস কৃষি খাতকে যেন বেকায়দায় ফেলেছ। এখন চলছে আমন মৌসুম। কিন্তু চারা( জালা) সংকটে ভূগছে ভোলার বোরহানউদ্দিনের চাষীরা। বিপাকে পড়ার আশংকা প্রকাশ করছেন বর্গাচাষীরা।

বেশি দামেও মিলেছে না চারা। সরেজমিনে ঘুরে জানাযায়, বর্ষা আর অমাবস্যার তিথিতে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয় জনপদ।অনেক জায়গায় পানি নিষ্কাশনের সুযোগ না থাকায় বীজতলায় আমনের চারা নষ্ট হয়ে যায়।অনেকে আগাম চারা রোপণ করে পরছে বিপাকে। এ সব দাবীংং মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে ভিন্ন কথা।তাদের মতে,অধিকাংশ কৃষক জলোচ্ছ্বাসের আগে আমন চারা রোপণ করে ফেলছেন।আসলে চারার বয়স বেশি হওয়ায় কম ফলনের আশংকায় তারা রোপণ কার্যে অনিহা প্রকাশ করছেন। চারা তেমন নষ্ট হয়নি। বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে এ উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৮ হাজার ৫শ হেক্টর। ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৩ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর। চলতি সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে তারা জানান। সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সাথে আলোচনা করলে অধিকাংশ কৃষক চারা সংকটে পুরো জমি আবাদে শংকা প্রকাশ করেন।

সাচড়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বর্গাচাষি হরজন আলী( ৫৫)জানান, ৪ একর জমিতে তিনি বিআর- ২২ জাতের ধান চাষের সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুসারে বীজতলা প্রস্তুত করেন। টানা বর্ষণ আর জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় তার বীজতলা। নষ্ট হয়ে যায় তার অর্ধেক চারা। অনেক কষ্টে কেজি প্রতি ১৩৫ টাকা দরে তিনি চারা কিনেন।যদিও ওই চারা দিয়ে তার ৪ একর জমি আবাধ করতে পারবেন না। জালার ( চারা) অভাবে কিছু জমি অনাবাদি থাকার আশংকা প্রকাশ করে বলেন, মৌসুম শেষে জমির মালিককে একর প্রতি ১২ মন ধান দিতেই হবে।ফলন হউক কিংবা না হউক।

সাচড়া ৬ নং ওয়ার্ডের বাথান বাড়ির কৃষক শহিদুল মীর জানান, ১০ একর জমির মধ্যে জোয়ারের আগে ২ একর রোপন করি।পানিতে তলিয়ে থাকার কারনে রোপনকৃত ধানের অর্ধেক নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট হয়ে যায় বীজতলার জালা। এখন ৪৩০০ টাকার জালা কিনে চারা রোপণ শুরু করি। জালার অভাবে ১ একর জমি খিল(অনাবাদি) থাকতে পারে। প্রায় অভিন্ন কথা বললেন একই ওয়ার্ডের মাজেদ,মহিজল ও দেউলা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের চাষি মফিজুল হক ঢালী।তারা জানান ১ কেজি ধানের জালা ২০০ থেকে ২৫০০ টাকায় কিনে তাদের জমি আবাদ করতে হবে। তারা জানায় ৫০/৬০ শতাংশ জালা নষ্ট হয়ে যায় প্লাবনে।  এ কারণে জালার সংকট।তারা আরো জানায়,খুব কম কৃষকই জালার সংকটে পুরো জমি আবাদ করতে পারবেন।অনাবাদি থাকার বিষয়টি আশংকা প্রকাশ করেন চাষী বাচ্চু, সফিজল, সফিকসহ অনেকে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, চারা নষ্ট নয়। আসলে কৃষকরা সাধারণত ৩৫-৪০ দিন বয়সী উত্তম চারা রোপণ করতে চায়। এর বেশি বয়স হলে চারায় গিট হয়ে যায়। ওই চারায় অপেক্ষাকৃত ফসল কম হয়। কৃষকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, তাদের কাছে আপদকালীন বীজ মজুদ আছে।
তারপরও, প্রকৃতি এবং ভাগ্যই যেন এখন কৃষকের শেষ ভরসা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

রয়্যাল এনফিল্ডের বৈদ্যুতিক বাইক আসছে

দখিনের সময় ডেস্ক: বৈদ্যুতিক বাইকের বাজারে ইতোমধ্যেই পা রেখেছে রিভল্ট এবং ওলা। ওলার বাইক বাজারে না এলেও আকর্ষণীয় ডিজাইনের সঙ্গে কম জ্বালানি খরচ নজর কেড়েছে...

দুধের বিকল্প হিসেবে যা খেতে পারেন

দখিনের সময় ডেস্ক: উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুধ বর্তমানে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। এটি বাদাম, ওট, নারিকেল বা মটরশুঁটি যাই হোক না কেন, দুধের এই বিকল্পগুলো স্বাস্থ্যকর ডায়েট...

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতাদের সাক্ষাৎ

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...

স্কলারশিপ-এ পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ ১০০ বাংলাদেশি, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ স্কলারশিপে ১০০ বাংলাদেশিকে পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম...

Recent Comments