নয়ণ সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি ॥
পটুয়াখালীর বাউফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিজার করার সময় একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে ওই প্রসূতি মারা গেলেও সন্তানটি সুস্থ রয়েছে। মৃত নিপা রানী (২৫) উপজেলার সূর্যমনি ইউপির স্বার্ণেস্বর গ্রামের ব্যাবসায়ী সুজন দাসের স্ত্রী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অন্তঃসত্ত্বা নিপা রানীকে তার স্বজনরা বাউফল হাসপাতলের সামনে সেবা ডায়াগনোস্টিক সেন্টার এ্যান্ড ক্লিনিকে ভর্তি করেন। বিকাল সারে ৫টায় তার সিজার হয়। পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নয়ন সরকার তাকে এ্যানেসথেসিয়া প্রদান করেন এবং তার স্ত্রী পুঁজা ভান্ডারী তার সিজার করেন। ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমান তালিকা থেকে নয়ন সরকারকে করোনাকালীন সময় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিপা রানীর মা শিখা রানী অভিযোগ করেন, তার মেয়ের সিজার করার পর আর জ্ঞান ফিরেনি। ওই দিন দিবাগত ভোর রাত ৫টার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তার মেয়েকে নবজাতকসহ উন্নত চিকিৎসার নামে একটি বেসরকারী এ্যাম্বুলেন্সযোগে বরিশালের উদ্দেশে পাঠান। এসময় তাদের সন্দেহ হলে পথে তারা দুমকি উপজেলার লুথান হেলথ কেয়ারে নিয়ে যান।
সেখানে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তার মেয়েকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। এর পরেও তারা বিষয়টি নিশ্চিত হতে মেয়েকে নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছান। সেখানে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকও তার মেয়েকে মৃত বলে বলে ঘোষনা করেন। মৃত নিপা রানীর স্বামী সুজন দাস অভিযোগ করেন, ভুল চিকিৎসার কারণে তার স্ত্রী মারা গেছেন। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তার মৃত স্ত্রীকে বরিশাল পাঠিয়েছেন। বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘ডাক্তার নয়ন সরকার ও তার স্ত্রী পুজা ভান্ডারীর সিজার করার কোন ইকতিয়ার আছে কিনা তা আমার জানা নেই। ডাঃ নয়ন সরকার বলেন, ‘ যে কোন এমবিবিএস ডাক্তার সিজার করতে পারেন। তবে অভিজ্ঞতা থাকলে ভাল হয়। তার এ্যানেসথেসিয়া দেয়ার ৬ মাসের সনদ আছে। তার স্ত্রী পুজা ভান্ডারীরও সিজার করার অনুমোতি আছে।’
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, সেবা ডায়গনোস্টিক সেন্টারকে জেলা সিভিল সার্জন চিঠির মাধ্যমে বন্ধ করার ঘোষনা দিলেও অদৃশ্য কারনে প্রতিষ্ঠানটি চলমান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায়ই প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলছে।