Home সারাদেশ নবজাগরণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক ৩ পর্বব্যাপী আয়োজিত "টেকসই কৃষি প্রকল্প ২০২১" এর পরিসমাপ্তি

নবজাগরণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক ৩ পর্বব্যাপী আয়োজিত “টেকসই কৃষি প্রকল্প ২০২১” এর পরিসমাপ্তি

দখিনের সময় ডেস্ক :

নবজাগরণ ফাউন্ডেশন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্ববৃহৎ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর, কয়েকজন উদ্যমী স্বপ্নবাজ তরুণের হাত ধরে নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের পথচলা শুরু হয়েছিল। আজ নবজাগরণ ফাউন্ডেশন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজশাহী অঞ্চলে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত যুব সংগঠন।

নবজাগরণ ফাউন্ডেশন, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে থাকে সবসময়। শুধুমাত্র সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করাই  নবজাগরণ ফাউন্ডেশন এর উদ্দেশ্য নয়, একই সাথে ‘সুবিধাবঞ্চিত’ শব্দটি বাংলাদেশ থেকে মুছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন। তারই ধারাবাহিকতায় গ্রামীণ অর্থনীতির স্থবিরতা পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াসে, দরিদ্র্য ও অসহায় কৃষক সমাজের জন্য  “কৃষিতে হাসবে দেশ, গড়বো সোনার বাংলাদেশ” প্রতিপাদ্যে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন আয়োজন করে “টেকসই কৃষি প্রকল্প ২০২১”।

প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কৃষি উপকরণের আবিষ্কার হয়ে থাকে। কিন্তু সেগুলোর সহজলভ্যতার অভাব ও কৃষিপণ্যের দর বৃদ্ধির সাথে কৃষকের দুর্দশা বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায় দরিদ্র কৃষক সময়োপযোগী কৃষিপণ্যের যোগান দিতে পারে না।

তবুও তাদের জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য ফসল ফলাতে হয় কিন্তু আশানুরূপ ফসল পায় না। নবজাগরণ ফাউন্ডেশন এসকল হতদরিদ্র কৃষকের জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার লড়াইকে সহজ ও সাফল্যমণ্ডিত করতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

পৃথিবী এখন করোনা মহামারীতে আক্রান্ত, জনজীবনে অর্থনৈতিক মন্দায় অনেকটাই যেন স্থবিরতা নেমে এসেছে। একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যাদের কোনো আয়ের উৎস থাকেনা, ইচ্ছা ও উদ্যম অফুরন্ত থাকলেও  অর্থনৈতিকভাবে স্পন্সর এর উপর নির্ভর করতে হয়।

অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও যখন কোন স্পন্সর পাচ্ছিল না নবজাগরণ ফাউন্ডেশন, তখন এটাই যেন তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবীরা যে দমবার পাত্র নয়, নবজাগরণ ফাউন্ডেশন নিজস্ব উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী, উপদেষ্টামণ্ডলী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তায় এই কৃষি প্রকল্প আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

পরবর্তীতে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন সাথে ক্লাব পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয় রাজশাহী ইউনিভার্সিটি এগ্রিকালচারাল ক্লাব, সাইকোলজি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন- পিএসএ, সূর্যকিরণ বাংলাদেশ, ড্রিমল্যান্ড ফাউন্ডেশন এবং দ্য স্কুল অফ ফেলিসিটি। এছাড়াও মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়, আই নিউজ বিডি এবং জাগোনিউজ২৪.কম।

নবজাগরণ ফাউন্ডেশন দেশের তিনটি জেলার চারটি উপজেলায় ৯০ জন প্রান্তিক কৃষক কে কৃষিপণ্য বিতরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বিতরনের সুবিধার্থে কৃষি প্রকল্প ৩ টি পর্বে ভাগ করে সম্পূর্ণ করা হয়। যাদের প্রকৃতপক্ষে প্রয়োজন, এমন কৃষক খুঁজে পেতে এবং সঠিক ভাবে তাদের কাছে কৃষি পণ্য পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের স্থানীয় প্রতিনিধিরা। তারা শতভাগ নিষ্ঠার সাথে কাজগুলো করেছেন।

প্রথম পর্বে ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী ইউনিয়নের পূর্ব ভাটদী গ্রামের পূর্ব পাড়ার কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়। এই এলাকার ২০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে ৪ কেজি করে সার বিতরণ করা হয়।

দ্বিতীয় পর্বে ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার অন্তর্গত কাঁচকোল বাজারে কৃষকদের মাঝে  বীজ বিতরণের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। উক্ত এলাকার ৩০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে কৃষি পণ্য হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সবজী বীজ (লাল শাক,পালং শাক, লাউ, সিম প্রভৃতি) বিতরণ করা হয়।

তৃতীয় পর্বে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে পাশাপাশি দুটি এলাকায় একসাথে (সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা ও খামার বজরা, উলিপুর, কুড়িগ্রাম) জ্ঞান বিকাশ বিদ্যানিকেতন থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি পণ্য বিতরণের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। উক্ত এলাকার ৪০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়।

প্রান্তিক কৃষকদের দুঃসময়ে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোতে তারা আনন্দিত। তারা দুশ্চিন্তার মধ্যেও স্বস্তি পাচ্ছে এবং আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।

এই আয়োজনের মাধ্যমে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন যেমন প্রান্তিক কৃষকদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে তেমনি ফাউন্ডেশন এর সাথে যোগাযোগ হয়েছে ওই এলাকার কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে। তারা নবজাগরণ ফাউন্ডেশন এর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কৃষিকে টেকসই করার লক্ষ্যে এবং কৃষকদের প্রাপ্য বিভিন্ন সেবা ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন ভবিষ্যৎ এ কৃষি বিষয়ক কর্মশালা এবং যথাযথ প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এছাড়া সংগঠনটির উন্নত কৃষি প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং তা ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে। আর এরকম উদ্যোগকে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন।

কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ এবং কৃষকেরা অর্থনীতির চালিকাশক্তি। সময় এসেছে কৃষকদের জীবনের টানাপোড়ন চুকিয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার। এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকদের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অনুদান যৎসামান্য হলেও বীজ থেকে ফসল প্রাপ্তির মতোই আয়োজনের পরিব্যাপ্তি বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

শীত নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

দখিনের সময় ডেস্ক: দেশের কোথাও কোথাও আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আবার কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়েছে...

Recent Comments