• ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অস্থির পাখি গাংচিল, বিশ্রাম নেয় খুব কম

দখিনের সময়
প্রকাশিত নভেম্বর ৯, ২০২১, ২১:৩৩ অপরাহ্ণ
অস্থির পাখি গাংচিল, বিশ্রাম নেয় খুব কম
সংবাদটি শেয়ার করুন...

বিশেষ প্রতিনিধি:

অস্থির পাখি গাংচিল। চঞ্চল প্রকৃতির এ পাখির স্থিরতা নেই বললেই চলে। দিনের বেশির ভাগই প্রজাতিটি নদ-নদীর ওপর উড়ে বেড়ায়। উদ্ধেশ্য খাদ্য আহরণ। বিশেষ করে লঞ্চ বা স্টিমারের প্রপেলারের প্রচন্ড ঘূর্ণিতে আঘাত পেয়ে ছোট ছোট মাছ আহত অথবা নিহত হলে এরা সেগুলো খাবার সুযোগ সহজে পেয়েযায়। এদের প্রধান খাবার মাছ। এ ছাড়াও ছোট ব্যাঙ, জলজ পোকামাকড় খায়।

কখনো একাকী আবার কখনো দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে গাংচিল। বিশ্রাম নেয় জলে পুঁতে রাখা কঞ্চি বা বাঁশে ওপর। তবে বিশ্রাম নিতে দেখা যায় খুব কম সময়ে। আমাদের দেশে কয়েক প্রজাতির গাংচিল দেখা যায়। এটি স্থানীয় প্রজাতির পাখি। বাংলাদেশ ছাড়াও কাশ্মীর, উত্তর ভারতের গাঙ্গেয় উপত্যকা, আসাম, শীলঙ্কা ও নেপালের নিম্নভূমিতে এ পাখি বিচরণ করে। প্রচন্ড শীতে এরা সমগ্র ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। আবার পরিযায়ী হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বেলুচিস্তান, পেশোয়ার, সিন্ধু প্রদেশ অবধিও।

অস্থির পাখি গাংচিল স্থানীয় প্রজাতির হওয়ায় দেশের নদ-নদী, হাওর-বাঁওড় কিংবা সমুদ্র উপকূলে এদের বছরের যে কোনো সময়ে দেখা মেলে। এক সময় দেশে এদের অবাধ বিচরণ ছিল; হালে এদের সংখ্যা খানিকটা হ্রাস পেয়েছে। এরপরও শীতে নদী পথের যাত্রীদের দেখার সুযোগ মেলে। বিশেষ করে এরা লঞ্চ-স্টিমারের পেছন ‘ক্রিয়াক ক্রিয়াক’ কর্কশ কণ্ঠে চেঁচিয়ে ওড়াউড়ি করতে দেখা যায়। অবশ্য জলযানের পেছনে ওড়াউড়ির একটা কারণও আছে।

গাংচিল লম্বায় ২৫-২৭ সেন্টিমিটার। স্লিম গড়ন। গলা ধবধবে সাদা। ঘাড়ে বন্ধনী দেখা যায়। প্রজননের সময় মাথা ও ঘাড় কালো। পিঠ গাঢ় ধূসর। কপাল, গলা সাদা। নিচের দিকে কালো। এ সময় ঠোঁট লাল দেখায়। পা-পায়ের আঙুল গাঢ় লাল। প্রজননের বাইরে পিঠের দিক ধূসরাভ। নিচের দিক সাদাটে। মাথায় কালো ছিট। শুধু মাথার চান্দিই নয় ঠোঁটের বর্ণ পাল্টিয়ে কালচে রূপ ধারণ করে প্রজননের পরবর্তীতে। তবে স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম।

প্রজনন মৌসুম সময় জুন থেকে আগস্ট। অঞ্চল বা দেশভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের ঘটে। বাসা বাঁধে নদী বা জলাশয়ের জলজ গুল্মের ওপর। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৮-২০ দিন।