দখিনের সময় ডেস্ক:
নাম তার তানজিম উমায়ের। বয়স মাত্র চার মাস ১৯ দিন। ইংরেজি নতুন বছর শুরুর রাতে (থার্টি ফার্স্ট নাইট) আতশবাজির শব্দে ভয় পেয়ে যায় সে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ে উমায়ের। এর পরদিনই তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উমায়ের জন্ম থেকেই হৃদরোগে ভুগছিল বলেও জানা গেছে।
উমায়েরের পরিবার থাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে অসুস্থ হয়ে শিশুটি। পরদিন ১ জানুয়ারি তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। শিশুটির বাবার নাম ইউসুফ রায়হান। তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমার ছেলে উমায়ের জন্মের পর থেকেই হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিল। প্রায়ই তার শ্বাসকষ্ট হতো এবং শরীর ঘেমে যেত। তিনি আরও জানান, এই ঘটনার আগে উমায়ের ১২ দিন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল।
এরপর হৃদরোগের সমস্যা থাকায় তাকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কিছুটা সুস্থবোধ করায় তাকে চারদিন পর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় নিয়ে আসি। এক সপ্তাহ পর আবারও চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল। সে হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে চিকিৎসককে দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসক ব্যস্ত থাকায় ১ জানুয়ারি সকালে যেতে বলা হয়। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে উমায়েরের অপারেশনও করার কথা ছিল।
ইউসুফ রায়হান বলেন, আমার ছেলেটা সারাদিন হাসিখুশিই ছিল। কিন্তু সেদিন (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর থেকেই টানা আতশবাজির শব্দে ভয় পেয়ে যায়। ছেলেটা বারবার কেঁপে উঠছিল। বাড়ির কাছে যেগুলো ফুটছিল সেগুলোর কারণে বিকট শব্দ হচ্ছিল। এরপর তাকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। সাধারণত রাতে তার ঘুম কম আসতো। সেদিন সারারাত সে ছটফট করছিল। শ্বাসকষ্ট হলে তাকে নেবুলাইজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। বলতে গেলে সে রাতে তাকে আধঘণ্টা পরপরই নেবুলাইজ করতে হচ্ছিল।
ইউসুফ রায়হান বলেন, আমার বাচ্চার মতো অনেক শিশুরই এ ধরনের সমস্যা থাকে। যাদের হৃদরোগের সমস্যা থাকে, উচ্চশব্দে তাদের সমস্যা হয়। আমি চাই না এভাবে আর কারও সন্তান বা কেউ মারা যাক। এ বিষয়ে আইনগত কোনও ব্যবস্থা নেবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনও কিছু ভাবিনি। তবে এ ধরনের ব্যবস্থা নিলে যদি অন্য কোনও সন্তান বাঁচতে পারে, তাহলে আমি এজন্য ব্যবস্থা নিতে রাজি আছি।