দখিনের সময় ডেস্ক:
রাসায়নিক সার আর সেইসঙ্গে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর মল-মূত্র পরিবেশদূষণের একটি বড় কারণ। রাসায়নিক সার ব্যবহারে মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়, ভূত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে রুক্ষ হয়। ফলে মাটিতে জৈব উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। এছাড়াও সরাসরি জমির উর্বরতায় অনেক অবদান রাখে এমন সব উপকারী প্রজাতির অণুজীব হ্রাস পায়।
বিশেষ উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, কৃষকের বন্ধু কেঁচো সে মাটিতে বাঁচতে পারে না। পানিদূষণের ফলে বিভিন্ন প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী, বিশেষ আমাদের দেশের কিছু মাছ ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং আরো কিছু মাছ বিলুপ্তির পথে। অন্যদিকে বাস্ত্ততন্ত্রের ভারসাম্য বিনষ্টকারী ক্ষতিকর জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর আধিক্য দেখা দেয়। এককথায়, রাসায়নিক সারের অত্যধিক ব্যবহারে মাটির বেশ ক্ষতি হয় এবং পর্যায়ক্রমে মাটির উর্বরতা পুরোপুরি লোপ পায়।
আবার গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতন, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ বৃদ্ধি পায় এবং গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ ঘটায়। এমন দূষণ জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু-পরিবেশ এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে মূত্র থেকে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম আলাদা করে নিয়ে সার হিসাবে ব্যবহার করতে পারলে তা হবে একাধারে অতিমাত্রায় পরিবেশবান্ধব এবং অর্থ সাশ্রয়ী। যাতে করে খুব সহজে প্রস্রাব সংগ্রহ করা যায়, ‘তপি অর্গানিক’ তাই নতুন নকশার ভবিষ্যত্ শৌচাগার তৈরি করেছে এবং পরীক্ষামূলক পর্যায়ের বেশ কিছু হাসপাতাল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শৌচাগার স্থাপন করেছে।
এ শৌচাগারগুলোতে মল ও মূত্র মিশ্রিত না হয়ে আলাদাভাবে পৃথক ট্যাংকে জমা হয়! সেখান থেকে মূত্র সংগ্রহ করে তা বেশ কয়েকটি ধাপে প্রক্রিয়াজাত করার পর কৃষিজমিতে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়। এ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপটি হচ্ছে নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ। অর্থাৎ অণুজীবের প্রভাবে নাইট্রোজেন যৌগ ইউরিয়া যাতে উদ্বায়ী অ্যামোনিয়াতে রূপান্তরিত না হতে পারে সে ব্যবস্থা করা। এর পর মূত্রকে দুর্গন্ধমুক্ত করা এবং এর থেকে পানি নিষ্কাশন করে আয়তনে কমিয়ে আনা। (তৃতীয় পর্ব কাল)