জুবায়ের আল মামুন ॥
ইটের ভাটায় খেজুর গাছ পোড়ানোসহ নানান কারণে দেশে কমেছে খেজুর গাছ। এদিকে যাও আছে তা থেকেও রস সংগ্রহ করার জন্য আগ্রহ হ্রাস পেয়েছে। ফলে খেজুর রসের উৎপাদন কমেছে, কিন্তু বেড়েছে কদর।
এক সময় ছিলো, শীতকালের সকালটা খেজুর রস ছাড়া যেনো জমতোই না। হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীত উপক্ষো করে খেঁজুরে রসের স্বাদ নিতে কোন কমতি ভিলো না বিভিন্ন বয়সের মানুষের। এই রসের স্বাদ নিতে সকাল সকলে ঘুম থেকে উঠে খেজুরের রসওয়াদের জন্য অপেক্ষা করতো শিশু-বৃদ্ধসহ নানান বয়সের মানুষ।
খেজুর রসের সেই অবস্থা এখন আর নেই। তবে খেজুর রাসের চাহিদা এখনো রয়ে গেছে। বলা চলে বেড়েছেও খানিকটা। এখনো খেজুর রস আর গুড় দিয়ে গ্রামাঞ্চলের বাড়িতে বাড়িতে জমে ওঠে নানা পদের পিঠা বানানোর ধুম। ভাপা, পুলি, সিদ্ধপুলি, মালপোয়া, রসের চিতইয়ের মতো বহু রকম পিঠা।
বাংলাদেশে আশ্বিন মাস থেকে সাধারণত শুরু হয় খেজুরের রস সংগ্রহ। তবে পৌষ ও মাঘ মাসে সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়। আবহাওয়া যত ঠান্ডা হয়, রসও তত বেশি পাওয়া যায়।
গাছে ধরা খেঁজুরে আগ্রহ কম থাকলেও শীতে মূল্যবান হয়ে ওঠে খেঁজুর গাছের ভেতরের মিষ্টি রস। লাভের অংক যথেষ্টই ভাল। পুরো মৌসুমের জন্য গাছ ডেকে নেন গাছিরা। প্রথম দিকে পরিচর্যার সামান্য কাজ থাকলেও পরে পাত্র বেঁধে রস সংগ্রহ করে বিক্রি করে।
১ নং রায়পাশা কড়াপুরের ইউনিয়নে গাছি মাসুদ মিয়া জানান, একটি খেজুর গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। প্রতি বছরে ৩ থেকে ৪ মাস খেজুর গাছ থেকে মিষ্টি রস সংগ্রহ করা হয়। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেয়। প্রতিহাড়ি রস ২০০ টাকা বিক্রয় করি।
ক্রেতা মিজানুর রহমান জানান, শীতের সকাল ও খেজুর রস দুটিই আমার খুব প্রিয়। ছোটবেলায় খেজুরের রস খাওয়া আমার অভ্যাসে পরিনত হয়েছিল। খেজুর রস বিক্রেতার অপেক্ষায় প্রায় সকালে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। কনকনে ঠান্ডায় ২ টাকা দিয়ে এক গ্লাস ঠান্ডা খেজুর রস খেতে কি যে একটা অনুভূতি যারা খাননি তাদের বুঝানো কঠিন। রসের পাশাপাশি খেজুর গুড়ও আমার কাছে খুব প্রিয়।