২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার তারেক রহমানসহ ১৪ আসামি এখনো পলাতক

দখিনের সময় ডেস্ক

ভয়াল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার আসামদের মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৪ জন এখনও পলাতক। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এ মামলায় রায় প্রদানের সময়ও তারেক রহমানসহ ১৫ আসামি পলাতক ছিলেন। এদিকে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ডিউকসহ ৯ সরকারি কর্মকর্তা দণ্ড ভোগ করে কারামুক্ত হয়েনে।

আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মোট আসামি ৫২ জন। তাদের মধ্যে জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়। এ ছাড়া ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার মামলায় হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। যে কারণে এই ৩ আসামিকে বিচারকালই অব্যাহতি দেন ট্রাইব্যুনাল। এতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দুই মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯ জন। যাদের মধ্যে বিএনপির তারেক রহমানের নামও রয়েছে।

রায়ের পর জামিনে থাকা দুই আসামি পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাইদ হাসান এবং ডিএমপির সাবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. ইকবালকে গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর দিয়াবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় কারাগারে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ এপ্রিল র‌্যাব-২ কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকা থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।

গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী পলাতক আসামিদের মধ্যে তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে আছেন। আর মামলাটিতে কারাবন্দি সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন আহমেদ ও আরেক ভাই বাবু ওরফে রাতুল বাবু বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছেন। বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি কাজী মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ সৌদি আরবে আছেন। মামালার আরেক আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিস চৌধুরী পলাতক অবস্থায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মারা গেছেন মর্মে দাবি করেছেন তার আত্মীয়স্বজনরা।

গোয়েন্দা সূত্রগুলো আরও জানায়, মামলার আসামি দুজন সরকারি কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব) এটিএম আমিন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার এখন দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। যদিও কোনো সূত্র দাবি করেছে, এটিএম আমিন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। এ ছাড়া ভারতে গ্রেপ্তার হয়ে দেশটির তিহার জেলে রয়েছেন দুই আসামি মহিবুল মুক্তাকিন ওরফে মুক্তাকিন ও আনিসুল মুরসালিন ওরফে মুরসালিন।

অন্যদিকে জঙ্গি গ্রুপ হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হাই, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বদর, মাওলানা লিটন ওরফে জোবায়ের ওরফে দেলোয়ার পাকিস্তানে আত্মগোপনে আছেন বলে জানা গেছে। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মাদ হানিফের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি।

তবে এরই মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডিত সাবেক তিন আইজিপিসহ ৯ সরকারি কর্মকর্তা দণ্ডভোগ করে কারামুক্ত হয়েছেন। সাজাভোগ শেষে বিভিন্ন সময় তারা সবাই কারামুক্ত হন বলে জানা গেছে। কারামুক্ত এই কর্মকর্তারা হলেন- সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব) সাইফুল ইসলাম ডিউক, ঢাকা মহানগর পুলিশের সবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান, সবেক ডিসি (দক্ষিণ) খান সাইদ হাসনাত, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি পরবর্তীতে আইজিপি (অব) খোদা বক্স চৌধুরী, সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সাবেক সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, সাবেক এএসপি আব্দুর রশীদ। মামলায় রায় প্রদানের সময় তিন সাবেক আইজিপিসহ ১১ সরকারি কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। এখনো কারাভোগ করছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার ও মেজর জেনারেল (অব) এটিএম আমিন।